পুলিশের পোশাকে মোটরসাইকেল চুরি, পাত্রী দেখতে গিয়ে অবশেষে ধরা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পুলিশের পোশাকে মোটরসাইকেল চুরি, পাত্রী দেখতে গিয়ে অবশেষে ধরা

আবারো প্রতারণা করতে গিয়ে চুয়াডাঙ্গায় এসে ধরা পড়লো পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) পরিচয়ে সেই সোহেল রানা হিমেল। এবার পুলিশ পরিচয়ে পাত্রী দেখতে গিয়েই পাত্রীপক্ষের সন্দেহ হলে সদর থানায় জানানো হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাতে সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে জেলা শহরের শেখপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় পুলিশের পোশাক ও নগদ টাকা। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে ঝিনাইদহ থেকে পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ট্রায়াল দিতে কৌশলে চুরি করা মোটরসাইকেল। এর আগে পুলিশ পরিচয়ে ওই পাত্রীরই এক আত্মীয়ের কাছ থেকে জামিনের কথা বলে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয় সোহেল রানা। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এসব অপরাধ স্বীকার করেছে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয়দানকারী প্রতারক সোহেল রানা ওরফে হিমেল। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। সোহেল রানা হিমেল (২৬) কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার আমবাড়িয়া গ্রামের মণ্ডলপাড়ার আজিবার রহমানের ছেলে।

বুধবার (৩০ মার্চ) সকালে বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। 
 
তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার শেখপাড়ার জহুরুল ইসলাম মানিকের মেয়েকে পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে নিজের বিয়ের পাত্রী হিসেবে দেখতে যায় সোহেল রানা। এ সময় তার কথাবার্তায় সন্দেহ হয় কনের পরিবারের। এ সময় কনের বাড়ির ভাড়াটিয়া আলমডাঙ্গা থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফফার জিজ্ঞাসা করলে সোহেল রানা যশোর মনিরামপুর থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন বলে জানায়। নিশ্চিত হওয়ার জন্য ওই থানায় যোগাযোগ করা হলে স্পষ্ট হয় যে, সেখানে সুমন নামের কোনো উপ-পরিদর্শক (এসআই) নেই। এরপর সকলের সন্দেহ হলে খবর দেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে পুলিশ নয় বলে স্বীকার করে। তার কাছে থাকা পালসার মোটরসাইকেলটিও (ঝিনাইদহ-ল-১২-১০২১) চুরি করা বলে জানায় সোহেল রানা। এরপর তার স্বীকারোক্তিতে শহরের হোটেল ভিআইপি’র বরাদ্দ নেয়া একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয় পুলিশের পোশাক ও নগদ সাড়ে আট হাজার টাকা। 

পুলিশ জানায়, সোহেল রানা পাত্রীর এক আত্মীয় নারী নির্যাতন মামলায় জামিন পাইয়ে দেয়ার নামে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিচয়ে হাতিয়ে নেয় নগদ ১২ হাজার টাকা। যার মধ্যে উদ্ধার হয় ৮ হাজার ৫শ’ টাকা।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই প্রতারক সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ থেকে চুরি করা মোটরসাইকেলের মালিক তারেক হোসেন চুয়াডাঙ্গা থানায় হাজির হন। এ সময় তিনি বলেন, গত ১৫ মার্চ পুলিশের পোশাক পরহিত অবস্থায় ট্রায়েল দেয়ার কথা বলে
মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়ে এই সোহেল রানা। 

এর আগে গত বছরের ১৯ এপ্রিল পুলিশের উপ-পরিদর্শক পরিচয়ে আদালতের নথি জাল করে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জামিন দেওয়ার নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সোহেল রানাকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তাকে আটক করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা ও চুরি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। মূলত পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা করায় তার একমাত্র পেশা হয়ে দাড়িয়েছে। 

এসএ/