যারা ক্ষমতায় থাকেন তারাই সাংবাদিকদের নির্যাতন ও কারাগারে নিক্ষেপ করেন: মির্জা ফখরুল


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


যারা ক্ষমতায় থাকেন তারাই সাংবাদিকদের নির্যাতন ও কারাগারে নিক্ষেপ করেন: মির্জা ফখরুল

আজকে সাংবাদিকদের অত্যাচার নির্যাতন নতুন না। যারা ক্ষমতায় থাকেন তারা সুযোগ পেলেই যারা সত্য কথা লেখেন তাদেরকে পাকড়াও করার চেষ্টা করেন। তাদেরকে নির্যাতন করেন, কারাগারে নিক্ষেপ করেন। অনেক সময় তাদেরকে কেটে টুকরা টুকরা করে দেন। এমনও হয়েছে খাসগির লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স হলে বুধবার সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, ‘আমি আমার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে রুহুল আমিন গাজী ভাইয়ের আপসহীন মনোভাব দেখেছি। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার্থে, গণতন্ত্রকে রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ করে আপনাদের লেখার স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তিনি আপসহীন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হচ্ছে। আমি দেখলাম যে কয়েকজন সাংবাদিক ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে গেছে। আমাদের দেশে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।’

বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন,‘ বাংলাদেশে এখন একটি ভয়াবহ অবস্থা চলছে। এখানে প্রফেসর আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী আছেন। আমাদেরতো অনেক বয়স হয়েছে কিন্তু এত খারাপ অবস্থা আমরা আগে কখনো দেখিনি। যেখানে কোনো প্রকার গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, ন্যূনতম স্বাধীনতাবোধ নেই। যারা চাকর তারা যদি মালিক বনে যায়, তখন তো দেশের এ অবস্থা হবেই।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে দেশে এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। তারা ইসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছেন। কারণ নিত্যপণ্যের দাম এতো বৃদ্ধি পাচ্ছে যে চাল, ডাল কেনার টাকা তাদের কাছে নেই। আর সেই সময় আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে শিল্পী এনে কনসার্টে নিজে গিয়ে গান শুনছেন। যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আমাদের দেশের সরকারি কর্মকর্তারা টরেন্টো ফ্লাইটে করে বাইরে যাচ্ছে। সেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।’

ন্যায্যমূল্যে কার্ড দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে গলা উঁচিয়ে বলা হচ্ছে এক কোটি ন্যায্যমূল্যের কার্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজকে পত্রিকায় দেখলাম আমার ঠাকুরগাঁওয়ে যাকে কার্ড দেওয়া হয়েছে, তিনি আওয়ামী মহিলা লীগের সভানেত্রী। তার দোতলা বাড়ি কিন্তু তার পাশেই একজন দুস্থ গরিব মানুষ, সে কোনো কার্ড পায়নি। দেশের এই অবস্থায় গাজী ভাই ১৭ মাস জেলে ছিলেন। আমি কিন্তু খুব অবাক হইনি। তিনি কিন্তু অন্যকোনো কারণ না, একটা ভয়ানক অপরাধ করেছেন। অপরাধ কি? একজন ব্যক্তি যাকে প্রভু মনে করা হচ্ছে, তার সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন। এটাতো বড় অপরাধ।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানিয়ে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিবসহ যারা আমার খোঁজ-খবর রেখেছেন, আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমার জন্য অনেকে নফল রোজাও রেখেছেন। আমি তাদের এই অনুভূতির যোগ্য কিনা জানি না। তবে ১৭ মাস এভাবে জেল খাটা একটি ইতিহাস। আজ থেকে সাংবাদিকদের মধ্যে আর কোনো বিভক্তি থাকবে না। যারাই বিভক্তির চেষ্টা করবে তাদের প্রতিহত করা হবে।’

নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ডিইউজের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, ডিইউজের একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, কবি আব্দুল হাই শিকদারসহ অন্যান্য সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

এসএ/