স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে শিক্ষার্থীর অনশন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে শিক্ষার্থীর অনশন

লালমনিরহাটের আদিতমারীর নামুড়িতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশন শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থী। গত শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুর থেকে নামুড়ি মদনপুর এলাকায় স্বামী আশিকুর জামানের (২২) বাড়িতে গিয়ে এ অনশন শুরু করে রিপা আক্তার (১৮) নামে ওই শিক্ষার্থী। আশিকুর জামান নামুড়ি মদনপুর এলাকার আমির হোসেনের ছেলে। এ ছাড়াও রিপা আক্তার একই এলাকার আবুল কালামের মেয়ে বলে জানা যায়।

এলাকাবাসী ও মেয়ের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, একই পাড়ার বাসিন্দা হওয়ায় তাদের দু’জনের মধ্যে পরিচয় ছিল। পড়াশুনার সুবাধে উভয়েই রংপুরে বসবাস করতে গিয়ে পরিচয় সূত্রে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে গত বছরের ডিসেম্বরে সাবালক হওয়ায় দুজনের সম্মতিতে নোটারি পাবলিক কার্যালয় লালমনিরহাটের এভিডেভিট করে তারা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে রংপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন।

পরিবারকে লুকিয়ে ছেলে রংপুরে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে এবং মেয়ে নার্সিংয়ের ভর্তি কোচিংয়ের কথা বলে একসঙ্গে বসবাস করত।

বিষয়টি ছেলের পরিবার বুঝতে পেরে চাপ দিয়ে কৌশলে ছেলেকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এক সপ্তাহ থেকে স্বামীকে খুঁজে না পেয়ে অবশেষে সেই মেয়ে ছেলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বামীর খোঁজ করে। কিন্তু এতে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলেকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমেও স্বামীর খোঁজ করতে না পেরে অবশেষে ছেলের বাড়িতে ঢুকে অনশন শুরু করে।

এ বিষয়ে রিপা আক্তার বলেন, আমরা দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে বিয়ে করে সংসার করতেছিলাম। আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার স্বামীকে কৌশলে ডেকে এনে তাকে লুকিয়ে রেখেছে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি আমার স্বামীকে ফিরে পেতে অনশনে বসেছি। এখানে আসার পর বাড়িতে ঢুকতেও আমাকে বাধা দেওয়া হলে জোর করে আমি বাড়িতে ঢুকেছি। আমি আমার অধিকার পেতে চাই।

মেয়ের মা রাশেনুর খাতুন বলেন, আমার স্বামীসহ ঢাকায় গার্মেন্টস চাকরি করে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাই। কষ্ট করে সংসার চালাই। আমার মেয়ে চাচিসহ এখানে থাকতো। মেয়ে গোপনে বিয়ে করেছে শুনে ঢাকা থেকে এসেছি সমাধান করতে। তিনদিন ধরে ছেলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধান করতে ব্যর্থ হওয়ায় মেয়েকেও আটকাতে পারিনি। সে তার শ্বশুরবাড়ি চলে গেছে।

এ বিষয়ে ওই ছেলের নম্বরে ফোন দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

ছেলের বাবা আমির হোসেন মোবাইলে বলেন, আমি বাইরে আছি। আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।

পলাশী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুর রশীদ বলেন, আমি ঘটনা শুনে এসে উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়েকে নিরাপদ স্থানে রেখে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। মেয়েকে তার স্বামীর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে পলাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউল ইসলাম ফাতেমী পাভেল বলেন, ঘটনাটি শুনে স্থানীয় মেম্বারকে সেখানে পাঠিয়েছি। যেহেতু মেয়েটি বাড়ির বাইরে তাই নিরাপদ জায়গায় রেখে দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকতারুল ইসলাম বলেন, ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ সেখানে গিয়েছিল। আমরা বিষয়টি দেখছি।

এসএ/