লাখাইয়ে বিপন্ন প্রজাতির মদনটাক উদ্ধার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


লাখাইয়ে বিপন্ন প্রজাতির মদনটাক উদ্ধার

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের পূর্ব সিংহগ্রাম থেকে বিপন্ন প্রজাতির একটি মদনটাক পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পূর্ব সিংহগ্রামের বাসিন্দা মামুন মিয়ার পুকুরপাড়ে অসুস্থ অবস্থায় পাখিটি পাওয়া যায়। সন্ধ্যায় স্হানীয়রা হবিগঞ্জ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরে খবর দেন।

শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কমকর্তা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরীসহ অফিস স্টাফরা পাখিটিকে উদ্ধার করে অফিসে নিয়ে আসেন। তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী জানান, উদ্ধার হওয়া মদনটাক পাখিটির চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলেই পাখিটি অবমুক্ত করা হবে।বিপন্ন প্রায় পাখিগুলোর একটি মদনটাক। অপ্রতুল বাসস্থান, জলবায়ুর পরিবর্তন, ইকো সিস্টেম ও ফুড চেইনে সমস্যা হওয়ায় এদের অস্তিত্ব আজ বিলুপ্তির পথে। আবাস মূলত দক্ষিণ এশিয়াজুড়েই; তবে কয়েকটি দেশ থেকে এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের বড় নদ-নদী ও সুন্দরবনে কদাচিৎ দেখা মেলে। এ দেশে টিকে থাকা পাখিগুলোর মধ্যে এ পাখিই সবচেয়ে বড়। বৈজ্ঞানিক নাম Lesser Adjutant। এটি জলচর পাখি হিসেবেও পরিচিত।
 
প্রাপ্তবয়স্ক মদনটাকের পিঠ উজ্জ্বল কালো। শরীর সাদা বর্ণের। ডানার গোড়ায় কালো রং থাকে। পালকহীন মুখের চামড়া ও ঘাড় লালচে। গলা হলদে বা লালচে। চোখ সাদা কিংবা ধূসর। পা লম্বা। পায়ের পাতা, নখর ও পা সবুজে ধূসর থেকে কালো। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা ও ঘাড়ে বিক্ষিপ্ত ঘন পালক থাকে। মদনটাক পানির ধারে, ঘাসযুক্ত এলাকা অথবা নরম কাদায় খাবার খুঁজে খায়। প্রধান খাদ্য মাছ। এ ছাড়া ব্যাঙ, সরীসৃপ, কাঁকড়া ও বিভিন্ন জলজ প্রাণী খায়। এরা কদাচিৎ গলিত পচা মাংসও খেয়ে থাকে। কখনো একাকী, কখনো জোড়ায় জোড়ায় আবার কখনো দলবদ্ধভাবে বিচরণ করে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে উঁচু গাছের মগডালে ডালপালা দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। স্ত্রীজাতীয় মদনটাক তিন থেকে চারটি পর্যন্ত ডিম দেয়। ২৮ থেকে ৩০ দিন পরই ডিম থেকে বাচ্চা হয়।

মদনটাকের আরেক জাতের নাম হাড়গিলা। এরা বড় মদনটাক নামেও পরিচিত। মহাবিপন্ন পাখির তালিকায় থাকা হাড়গিলা এ দেশের প্রকৃতিতে বিলুপ্তির পথে।

এসএ/