যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন, পুলিশ পরিদর্শক শ্রীঘরে


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন, পুলিশ পরিদর্শক শ্রীঘরে

সাতক্ষীরায় ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।  রবিবার (৩ এপ্রিল) সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আজম তার জামিন বাতিল করে এ আদেশ দেন।

আসামি রফিকুল ইসলাম ঝিনাইদহ জেলা সদরের হলিধানী প্রতাপপুর গ্রামের মৃত আফছার আলীর ছেলে ও বরগুনা জেলার তালতলি থানার পরিদর্শক (তদন্ত)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের ঠিকাদার মৃত আব্দুল মজিদের মেয়ে তানিয়া আফরিনকে ২০১৩ সালের ২২ মার্চ কালিগঞ্জ থানায় উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিন লাখ টাকা দেন মোহরে বিয়ে করেন ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী গ্রামের রফিকুল ইসলাম। বিয়ের আগে ৫ লাখ ও বিয়ের পর ১৩ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে নেন রফিকুল। এরপরও ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে তানিয়াকে মারপিট করে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর তাড়িয়ে দেয় রফিকুল ও তার পরিবারের সদস্যরা।

ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর মীমাংসার নামে কালিগঞ্জের পূর্ব নারায়নপুর গ্রামে এসে স্ত্রীকে দোতলায় ডেকে নিয়ে মারপিট করে চলে যায় রফিকুল। মারাত্মক জখম অবস্থায় তানিয়াকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি তানিয়া তার স্বামী রফিকুল, শ্বাশুড়ি রাহেলা, দেবর সাইফুল ও সাইফুলের স্ত্রী নাহারের নামে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পিটিশন মামলা দায়ের করেন। বিচারক এমজি আযম মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২) এর সেরেস্তার অ্যাড. বসির আহম্মেদ।

বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহার ছয় জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে রফিকুলের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা আছে মর্মে গত বছরের ২২ মার্চ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আযম আসামি রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

তানিয়া আরেফিনের অভিযোগ, বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. বসির আহম্মেদ হলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে একই সেরেস্তার আব্দুল মজিদ (২) হওয়ায় তিনি অবাক হয়ে যান। কারণ অ্যাড. আব্দুল মজিদের পরামর্শ অনুযায়ী তারই সেরেস্তায় মামলা করা হয়।

একপর্যায়ে আসামি মীমাংসার নামে তিন বার জামিন নেন। বিপদ বুঝে তিনি আইনজীবী পরিবর্তন করেন। রোববার আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতে আসামি রফিকুলের স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন।

এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু, অ্যাড. এসএম হায়দার, অ্যাড. তপন কুমার দাস আসামির জামিন বাতিলের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানির পর বিচারক এমজি আযম আসামি রফিকুল ইসলামের জামিন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেল বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু পুলিশ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের জামিন আবেদন নাকচ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এসএ/