ধরাছোঁয়ার বাইরে বনফুল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোতালেব
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৫৭ অপরাহ্ন, ২০শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫

* ছিলেন আওয়ামী লীগের অন্যতম অর্থ যোগান দাতা
* ভারী পদ-পদবী নিয়ে ব্যবসার পাশাপাশি ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত ছিলেন আওয়ামী রাজনীতির সাথে
* সাতকানিয়াকে জামায়াত মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন একাধিকবার
* রয়েছে বিপুল অবৈধ অর্থপাচারের অভিযোগ
আবুল হাসনাত, চট্টগ্রাম: সাতকানিয়াকে জামায়াত-শিবির মুক্ত করে চেহারা পাল্টে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া বনফুল গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব সিআইপি এখনো রয়েই গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের অর্থের অন্যতম যোগানদাতাও ছিলেন তিনি।
ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে অবস্থান কর্মসূচিতে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ.ম.ম মিনহাজ, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ, সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন, সাতকানিয়া পৌরসভা মেয়র দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. জুবায়ের, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর'কে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা সহ হামলার অভিযোগে মামলা হওয়ায় বর্তমানে তিনি আছেন লোকো চক্ষুর অন্তরালে।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারকারীদের তালিকায় আছেন হেভিওয়েট রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে আওয়ামী পন্থী ব্যবসায়ীরাও। তারা দেশের অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে নানা কৌশলে অনেকটা নির্বিঘ্নেই অর্থ পাচার করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের আলোচিত ব্যবসায়ী আবদুল মোতালেব ও অন্যতম।
তিনি শিল্প গ্রুপ বনফুল অ্যান্ড কিষোয়ান গ্রুপের এর চেয়ারম্যান। বহুল আলোচিত সংসদ সদস্য সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে বিপুল অর্থপাচারের অভিযোগ, কৌশলে দেশের বাইরে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। এর মধ্যে একাধিক দেশের ব্যাংক এবং ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানে জমা করেছেন হাজারে কোটি টাকা।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং নেটওয়ার্কের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে বলে সরকারী একটি সূত্রে নিশ্চিত করেছে। এদিকে বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)। মোতালেব বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার রাজনীতিবিদ। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ২০২৪ বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বর্তমানে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এমপি হলে সাতকানিয়া থেকে জামায়াত শিবির মুক্ত করার বার্তা দিলেও বর্তমানে নিজের দেখা মিলছে না সাতকানিয়ায়।
বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগের পর লোহাগাড়া থানায় মোতালেব এর বিরুদ্ধে মামলা করেন মো. ফারুকুল ইসলাম (৩৬) নামের এক ব্যক্তি। বাদী ফারুকুল লোহাগাড়া থানাধীন আধুনগর ইউনিয়নের নূর হোসেন চকিদারপাড়া এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে। ওই মামলায় এম এ মোতালেব ছাড়াও আরও ২৪৭ জনকে এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান তিনি। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২০ জুলাই দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের সামনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি ছিল।
ওই অবস্থান কর্মসূচিতে (তৎকালীন) এমপি এম এ মোতালেবের নির্দেশে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল ও পেট্রোলবোমা নিয়ে হামলা চালান। এসময় বাদীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এই বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
আরএক্স/