চার মাসে মামলা হ্রাস,আইনশৃঙ্খলায় সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট প্রভাব


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮:৫৫ পিএম, ২৯শে জুন ২০২৫


চার মাসে মামলা হ্রাস,আইনশৃঙ্খলায় সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট প্রভাব
ছবি: প্রতিনিধি

মাগুরা জেলার চারটি থানা,হাইওয়ে থানা এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিগত চার মাসে জেলার সামগ্রিক অপরাধের হার ক্রমাগতভাবে হ্রাস পাচ্ছে।


বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট মহল বলছেন, এই হ্রাসের পেছনে কাজ করছে সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযান ও পুলিশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, থানা ও ইউনিটভিত্তিক মামলা পরিসংখ্যান:মাগুরা সদর থানা:মার্চে ৫২টি মামলা হলেও জুনে তা কমে দাঁড়ায় ৩২টিতে।শ্রীপুর থানা:মার্চে ২৮টি মামলা, জুনে নেমে এসেছে ১৮টিতে।শালিখা থানা:জুনে মামলার সংখ্যা মাত্র ৩টি,যা মার্চে ছিল ১২টি।মোহাম্মদপুর থানা:মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত কিছুটা ওঠানামা থাকলেও স্থিতিশীল।হাইওয়ে থানা:প্রতিমাসেই মামলা ২-৩ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর:

মার্চে ৩১টি মামলা হলেও জুনে তা কমে ২১টিতে দাঁড়িয়েছে।


চার মাসে জেলার মোট মামলার পরিমাণ ছিল: মার্চ ১৪৬টি,এপ্রিল ১৪৩টি,মে ১২৪টি,জুন ১০০টি। এই ধারাবাহিক হ্রাস জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিরই ইঙ্গিত দেয়।


জেলা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে মাগুরা আর্মি ক্যাম্প। বিগত কয়েক মাসে পরিচালিত শতাধিক অভিযান থেকে উদ্ধার হয়েছে অবৈধ অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ মাদক এবং গ্রেফতার হয়েছে বহু চিহ্নিত অপরাধী।


একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন: মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি ও শৃঙ্খলা কার্যক্রম অপরাধীদের মনে এক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি করেছে। এটি অপরাধ প্রবণতা হ্রাসের বড় কারণ।


শহরের সাধারণ মানুষ বলছে,আগের তুলনায় এখন অনেকটাই নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য মনে হচ্ছে মাগুরা। সদরের এক ব্যবসায়ী জানান: আগে সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতাম। এখন রাত ১০টাও নিরাপদ মনে হয়। সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বিত অভিযান আমাদের সাহস দিয়েছে।



অপরাধ নিয়ন্ত্রণে মাগুরার বর্তমান অবস্থান একটি ইতিবাচক উদাহরণ হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত তৎপরতা ও জনগণের সহযোগিতা থাকলে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।


মাগুরার এই অগ্রগতি দেশের অন্যান্য জেলা প্রশাসনের জন্য একটি পথনির্দেশনা হতে পারে।


মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আইয়ুব আলী বলেন: সদর থানায় আমরা নিয়মিত টহল, চেকপোস্ট তল্লাশি এবং গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে অপরাধ দমনে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি জনগণের সহযোগিতা ও সেনাবাহিনীর আভিযানিক সমর্থন আমাদের আরও কার্যকর করেছে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণেই মামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো—মাগুরাকে একটি সম্পূর্ণ নিরাপদ জেলা হিসেবে গড়ে তোলা।


মাগুরা আর্মি ক্যাম্পের কমান্ডার বলেন: আমরা দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের অংশ হিসেবে মাগুরা জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য অপরাধ প্রতিরোধ, মাদক নির্মূল ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মাগুরা জেলায় অপরাধ প্রবণতা কমে আসা আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসের সুফল। ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে, যাতে জনগণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করতে পারে।



এসডি/