ভারতের উজানের ঢলের পানিতে ফেনীতে ডুবলো ৩০ গ্রাম


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:২০ পূর্বাহ্ন, ৯ই জুলাই ২০২৫


ভারতের উজানের ঢলের পানিতে ফেনীতে ডুবলো ৩০ গ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উজানের ঢল ও টানা ভারি বর্ষণের কারণে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া—এই তিনটি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ৩০টি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে এবং হাজারও মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।


পরশুরাম উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।


পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনা, অলকা, শালধর, গদানগর, সাতকুচিয়া ও বেড়াবাড়িয়া এবং ফুলগাজী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর, দেড়পড়া ও দৌলতপুর এলাকায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই বিভিন্ন গ্রামের ঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।


একজন ভুক্তভোগী বলেন, “গত বছরও বন্যায় ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছিল। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও পানিতে ডুবল আমাদের ঘর।”


ফেনী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় সর্বোচ্চ ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। আবহাওয়াবিদ মো. মজিবুর রহমান জানান, আগামী দুই দিন জেলায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।


ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মোট ৯৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ফুলগাজীতে ৩২টি মাধ্যমিক ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবং পরশুরামে ৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।


এ পর্যন্ত দুর্গতদের মাঝে ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসাসেবা সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার জানান, মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ছয়টি স্থানে বড় ধরণের ভাঙন হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি মেরামত ও বালির বস্তা ফেলার কাজ চলছে। তবে উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।


জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখায় ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, যেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।