আশুলিয়ায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের মামলা, গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:৫০ অপরাহ্ন, ১৯শে জুলাই ২০২৫


আশুলিয়ায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের মামলা, গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান
ফাইল ছবি।

মোঃ শরিফ শেখ: আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক দুলাল ডাক্তার-এর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, হত্যাচেষ্টা, লুটপাট ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী কানাডা প্রবাসী নারী মরিয়ম ইয়াসমিন। 


শুক্রবার (১৮ জুলাই) আশুলিয়া থানায় দায়ের করা মামলাটির নম্বর ৫১।


মরিয়ম ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, আশুলিয়ার দক্ষিণ গাজীরচট এলাকায় তার পারিবারিক বাড়িতে দুলালের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী চক্র বারবার হামলা চালিয়েছে। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত এক মাসে তার বাড়িতে তিনবার হামলা হয়েছে। এসব হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র।


সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি ঘটে গত ১৬ জুলাই, যখন দুলালের নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র দল সীমানা প্রাচীর ভেঙে বাড়িতে ঢুকে বোমাবাজি, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। এসময় তারা বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।


মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আসাদুল হক দুলাল তার রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছেন। তিনি একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন, যার মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।


এ বাহিনীর অন্যতম প্রধান সদস্য হিসেবে নাম এসেছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী আলমের, যার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা ও মাদক পাচারের একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আলমের কাছে ৪ থেকে ৬টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে এবং তার পৃষ্ঠপোষক দুলাল নিজেই।


মামলায় আরও নাম এসেছে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত দেলোয়ার, ছোট নূরা, বাবু, ফরিদ, বড় নূরা ও শাহাদাতের, যারা দুলালের নির্দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে।


আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, "দুলাল ডাক্তার স্থানীয়ভাবে একজন পরিচিত দখলবাজ ও সন্ত্রাসী। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক কর্মসূচির পর সে আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রবাসীর বাড়িতে হামলার ঘটনায় সে অভিযুক্ত। বর্তমানে সে পলাতক, তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে।"


এলাকার বাসিন্দারা জানান, মামলার পরও এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগীদের হুমকি দিচ্ছে।


একজন ভুক্তভোগী বলেন, “টাকা না দিলে সন্ত্রাসী পাঠায়। বলে, 'আমি বিএনপির নেতা, কেউ আমার কিছু করতে পারবে না।’ এটা কি রাজনীতি, না অপরাধচক্র?”


স্থানীয়দের দাবি, রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে কেউ যেন আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে না পারে। তারা বলেন, “চাঁদাবাজি, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যাচেষ্টা—এসব গুরুতর অপরাধ। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হোক।”


আরএক্স/