জাতীয় হাফেজ পুরস্কারপ্রাপ্ত হাফেজ তৌফিকের রহস্যজনক মৃত্যু
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:১৫ অপরাহ্ন, ২১শে জুলাই ২০২৫

জাতীয় হিফজ প্রতিযোগিতায় একাধিকবার পুরস্কারজয়ী হাফেজ মোহাম্মদ তৌফিক সিয়াম (১৭)–এর রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঢাকার মিরপুর এলাকার ‘মারকাজু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামিয়া’ মাদরাসায় রবিবার সকালে তার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়—তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
রবিবার (২০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তৌফিকের পরিবারের কাছে ফোন করে মৃত্যুর খবর জানায়। খবর পাওয়ার পরপরই ঢাকায় ছুটে যান তার স্বজনরা। সেখানে গিয়ে তারা মরদেহের ‘অস্বাভাবিক’ অবস্থান দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন সরদারের বড় ছেলে তৌফিক রাজধানীর এই মাদরাসায় হিফজসহ কোরআন শিক্ষায় অধ্যয়ন করছিলেন।
তৌফিকের বাবা সালাউদ্দিন সরদার বলেন, “আমার ছেলে অত্যন্ত ধর্মভীরু, সৎ ও পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। আত্মহত্যা করার মতো কোনো মানসিক অবস্থা তার ছিল না। এটি স্পষ্টতই একটি হত্যাকাণ্ড, যাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর চেষ্টা চলছে। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।”
পরিবারের আরেক সদস্য এম শরিফ উদ্দিন বলেন, “মরদেহটি বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। একটি পা টয়লেট প্যানে, অন্য পা মেঝেতে ভাঁজ হয়ে ছিল—এভাবে আত্মহত্যা সম্ভব নয়। পুরো বিষয়টি সন্দেহজনক।”
তৌফিকের চাচা আকছেদ আলী জানান, “খবর পেয়েই আমি মাদরাসায় যাই। গিয়ে দেখি পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করছে। মরদেহের একটি ছবি থেকে দেখা গেছে, তার একটি পা মাটিতে পড়ে ছিল। এটি আত্মহত্যা নয়—এটা হত্যা।”
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে দারুস সালাম থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আজিজুল ইসলাম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মরদেহের শরীরে দুই জায়গায় বেতের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।”
তৌফিকের মৃত্যুর খবরে তার নিজ এলাকা সাতক্ষীরার গাবুরা ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এলাকাবাসী ও স্বজনদের একটাই দাবি—ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।
আরএক্স/