শ্রীপুরে বোরে ধানে নেক ব্লাষ্ট রোগ, কৃষকের মাথায় হাত


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


শ্রীপুরে বোরে ধানে নেক ব্লাষ্ট রোগ, কৃষকের মাথায় হাত

গাজীপুরের শ্রীপুরে দিগন্ত জোড়া ধানের ক্ষেত। মাঠ ভরা সবুজ ধান। দূর থেকে মনে হবে দু’একটি ক্ষেতের ধান আগাম পেকে গেছে। কাছে গিয়ে হাত দিলেই চোখ কপালে। লম্বা ধানের ছড়ার ধান সোনলী রং ধরেছে। চাল নেই একটি ধানেও। এমন অবস্থা হয়েছে  উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের সামিউল ৮ বিঘা জমিতে।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন এটি নেক ব্লাষ্ট রোগ। নিয়মিত তিন বার ছত্রাক নাশক ব্যবহার করলে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সামিউল জানান, তিনি পেশায় শিক্ষকতার পাশাপাশি ধান চাষ করে থাকেন। চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার বীজ বিক্রয় কেন্দ্র থেকে ব্রি ধান-২৮ জাতের বীজ এনে ৮বিঘা জমিতে চাষ করেন। ধান রোপনের নির্দেশনা মেনেই যথাসময়ে ধান রোপন করেন। তাঁর ৮ বিঘা জমিতে শিষ আশা পর্যন্ত খরচ পড়েছে ৪৫ হাজার ২’শ টাকা। ক্ষেতে ধান দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত। এ জমি থেকে ধান উৎপাদনের আশা ছিল ২’শ মন। যা বিক্রি করে আয় হতো তার লাখ টাকা। সে আশায় গুড়ে বালি। একটি টাকাও ঘরে আসবেনা। পুরো জমির ধান সোনালী রং ধরেছে। দূর থেকে মনে হবে ধান পেকে গেছে। কাছে গিয়ে ধানের ছড়া ধরলেই যে কারো চোখ কপালে। লম্বা ধানের ছড়ায় চালনেই একটি ধানের। প্রতিটি ছড়াই শুকিয়ে সোনালী রং ধরেছে। কোন ছড়ার গোড়ায়, আবার কোনটার শিষের নিচের কান্ড পচে গেছে।

সামিউলের অভিযোগ করে বলেন, গ্রাম জুড়ে শত শত বিঘা জমিতে বোরধান চাষ হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকের কোন খোঁজ খবর রাখেন না।

শুধু সামিউলের জমি নয় এ রোগ আশ পাশের জমিতেও ছড়িয়ে পড়ছে। কিছু কিছু ক্ষেতে এ রোগে আক্রমন দেখা যায়।

টেংরা গ্রামের ধান চাষী আবুল কালাম জানান, বেশ ক’বছড় ধরেই বোরো ধানে এ রোগের আক্রমন হয়ে থাকে। কোন ক্ষেতে সংক্রমিত হলে দু’এক দিনের মধ্যেই পুরো জমির ধান নষ্ট হয়ে যায়।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নেকব্লাষ্ট রোগ অতি দ্রুত ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত ক্ষেত রক্ষা করা সম্ভব হয় না। নেকব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষকরা বোর ধান চাষে ক্ষতির শিকার হয়ে থাকেন।

মাওনা চৌরাস্তার সার-কীটনাষক ব্যবসায়ী মো.নুরুজ্জামান জানান, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বোর ধানে এ রোগে সংক্রমনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা শুকনো ধানের গাছ নিয়ে এসে রোগ ও প্রতিকার বিষয়ে জানতে চান। 

তিনি আরও বলেন ধানে শীষ আসার সময় তিন ধাপে ছত্রাক নাষক ব্যবহার করলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. কবির বলেন, কৃষকদেরকে ব্রি-ধান ২৮ রোপনে নিরুৎসাহীত করা হয়। তবুও তারা শুনে না। এ জাতের ধানে নেকব্লাষ্ট রোগের আক্রমন বেশী হয়ে থাকে। ধানে শীষ আসার আগ মূহুর্তে তিন দফায় ছত্রাক নাষক স্প্রে করলে অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এস.এম মূয়ীদুল হাসান জানান, বোর ধানে নেকব্লাষ্ট রোগের আক্রমন হয়ে থাকে। কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে পরিদর্শণ করে থাকেন। তারা কৃষকদের যথাযথ পরমর্শও দেন। কোন কৃষক কর্মকর্তাদের পরমর্শ না মেনে ধান চাষ করে থাকেন। এজন্য কিছু সমস্যা হয়ে থাকতে পাড়ে। 

তিনি আরো বলেন সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।  

এসএ/