তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে,১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৫৭ এএম, ১৪ই আগস্ট ২০২৫


তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে,১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি
সংগৃহীত ছবি।

উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বর্ষণের ফলে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। 


বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার থেকে ১১ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।


বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ডিমলার অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ডুবে গেছে আবাদি জমি ও ফসলের ক্ষেত।


এটি চলতি মৌসুমে তিস্তার তৃতীয় দফা বন্যা। স্থানীয়রা বারবার ত্রাণের বদলে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছেন।


উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 


এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রথমে ৭ সেন্টিমিটার ওপরে পৌঁছায়, পরে কিছুটা কমে ৪ সেন্টিমিটারে নেমে আসে। রাতের বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ভোরের দিকে আবারও তা বেড়ে ১১ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে যায়।


তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, জুলাইয়ের শেষ দিকে ও আগস্টের শুরুতে দুই দফা পানি বৃদ্ধির পর এবার তৃতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা বারবার ত্রাণের বদলে স্থায়ী সমাধান হিসেবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।

পানিবন্দি মর্জিনা বেগম বলেন, গরু-ছাগলের খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছি। ১০ কেজি চাল পেয়েছি, কিন্তু এটা সমাধান নয়। বারবার যেন বন্যা না হয়, সেই ব্যবস্থা চাই।


ডিমলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। এতে ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেরস্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ তিস্তাপারের বিভিন্ন চরের লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মানুষ আতঙ্কে আছেন।


টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে নদীর কয়েকটি চ্যানেল বের হয়ে পূর্বখড়িবাড়ী মৌজায় বেশ কিছু আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে আমরা চ্যানেলগুলো বন্ধে কাজ করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব কাজে আমাদের সহযোগিতা করছে। চরাঞ্চলের দুই শতাধিক পরিবারের বাড়িঘরে পানি উঠেছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।


এটি চলতি মৌসুমে তিস্তার তৃতীয় দফা বন্যা। স্থানীয়রা বারবার ত্রাণের বদলে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছেন। এবার ১৩ আগস্ট থেকে পানি বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে এবং এখনও বিপদের আশঙ্কা কাটেনি।


এসডি/