ফুলবাড়ীতে শতবছরের ঐতিহবাহী চৈত্র সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ফুলবাড়ীতে শতবছরের ঐতিহবাহী চৈত্র সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত

গ্রামবাংলায় ঋতুভিত্তিক নানা উৎসব ও পারবণ সংস্কৃতি চর্চার মেলবন্ধন। তেমনি গ্রামীণ মেলা, চৈত্র সংক্রান্তি কিংবা বৈশাখী মেলা বাঙালি সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। করোনার কারনে দু’বছর মানুষ সবকিছু থেকে দূরে থাকলেও আবার তা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

বাঙালির বারো মাসে তোরো পারবণ এই শব্দটির ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার গ্রামে প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিনে চৈত্র সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এবছর চৈত্র সংক্রান্তির এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে ১লা বৈশাখ বৃহস্পতিবার। 

উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মহদিপুর শ্রী শ্রী শিব মন্দির চত্বরে দিনব্যাপী বসে শত বছরের প্রাচীন ও ঐতিহবাহী চৈত্র সংক্রান্তি এই মেলা। মেলার সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির ছিল নিবিড়। এই সংস্কৃতিতে ঘটে সব ধর্মের মানুষের মিলনমেলায়। বেশ কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকার কেন্দ্রস্থল মন্দিরের বট গাছের নিচে খোলা মাঠে। মেলাকে ঘিরে যেন গ্রামীণ জীবনে ফিরে আসে প্রাণচাঞ্চল। মেলাকে কেন্দ্র করে সেখানে নানা রকমের গ্রামীন খাবরসহ আসবাবপত্র ও প্রসাধণ সামগ্রীসহ খেলনা সামগ্রীর দোকানের পসরা বসে মেলা চত্বরে।  

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ও সমাজ সেবক মহেন্দ্র নাথ সরকার মন্টু জানান, বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চর্চায় এক সময় বেশ মনোযোগ ছিলো মানুষের। বাঙালির সকল কাজের সাথে মাটির ঘ্রাণ ও শেকড়ের নিবিড় টান ছিলো বিদ্যমান। কালের বিবর্তনে মেলার সেই আগের জৌলস নেই, তবে বিলুপ্ত হয়ে যাইনি এখোনো। মেলার গোড়াপত্তন করতেন তৎকালীন সময়ের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বর্তমানে তাদের উত্তর সুরিরা বংশগত পর¤পরায় প্রতি বছর সেই মেলার আয়োজন করে আসছেন।

মন্দির এবং মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য কমল সরকার ও বিষেশ্বর সরকার জানান, এটি শতবছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী মেলা। পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্যকে রক্ষা করতেই তাদের এই মেলার আয়োজন। তবে করোনার জন্য দুই বছর মেলা করা যায়নি। তবে যথাবীতি পূর্ব-অর্চনা হয়েছে। 

শহর থেকে প্রাচীনতম এই মেলায় বেড়াতে আসা নারায়ণ শর্মা বলেন, মেলা বাঙালির প্রাণের উৎসব। একটা সময় ছোট বেলায় মাটির ব্যাংকে আমরা টাকা জমিয়ে রাখতাম। সেই টাকায় মেলায় খেলনা কেনা হতো। 

খয়েরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, গ্রামীণ মেলা, চৈত্র সংক্রান্তি কিংবা বৈশাখী মেলা বাঙালির সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।ন চৈত্রসংক্রান্তি মেলা হোক বা বৈশাখী মেলা এই সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো ছিলো সকল ধর্মাবলম্বী মানুষের মাঝে অসম্প্রদায়িক সেতুবন্ধন। বাঙালির এই অতিত ঐতিহ্যগুলোকে ধারণ করেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে হবে।

এসএ/