দুর্নীতি’র কারণে বরখাস্ত অধ্যক্ষ, চাকরি ফিরে পেতে পুনরায় স্বাক্ষর জালিয়াতি
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট খলিশা ডুলিতে অবস্থিত ‘আদর্শ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল’ এর অধ্যক্ষ ডাঃ মোজাম্মেল হক পাটোয়ারীকে নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
জানা যায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী কলেজ গভর্নীংবডির সভাপতি জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের গত ২ ডিসেম্বর ২০২১ইং তারিখে ডাঃ মোঃ মোজাম্মেল হক পাটোয়ারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন।
বরখাস্তের ফলে তিনি ৮ দিন পর গত ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর স্বপদ ফিরে পেতে আবেদন করেন, আবেদনে উল্লেখ করেন তাকে বিধি বহির্ভূতভাবে কলেজ গভর্নীংবডি সাময়িক বরখাস্ত করেন। এছাড়াও তিনি কোনো দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত নয় তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলেও আবেদনে উল্লেখ করেন। ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে স্বপদে পুর্নঃবহালের আবেদন করেন।
আবেদনে ৩ জনের সুপারিশ রয়েছে তবে তা একই হাতের লেখা বলে গভর্নীংবডির একাধিক সদস্য জানান, ৩ জনের সুপারিশ নামার মধ্যে দু'জন বলছে ভিন্ন কথা.. অভিভাবক প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন বলেন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হককে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে কলেজ গভর্নীংবডির সভাপতি জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সাময়ীকভাবে বরখাস্ত করেন এর ফলে তিনি স্বপদ ফিরে পেতে বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করে। আবেদনে সুপারিষের বিষয়ে তিনি বলেন আমাকে বলেছে তবে আমি সুপারিশ করিনা।
সুপারিশের বিষয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি খোরশেদ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দেননি তবে তিনি বলেন লেখা বা স্বাক্ষর দেখলেই বুঝতে পারবেন! এ বিষয়ে যদি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি জেলা প্রশাসক জানতে চায় আমি ওনাকেই বলবো আমি আর কারো কাছে বলতে চাই না।
ডাঃ মোজাম্মেল হকের ছোট ভাই মেডিক্যাল অফিসার ডঃ মমিনুল হক জানান বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর যে আবেদন করা হয়েছে তাতে আমি সুপারিশ করেছি, অন্যদের কথা আমি বলতে পারবোনা।
কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হারুন হাওলাদার জানান অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে তাই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা বলে শেষ করা জাবে না,পা থেকে মাথা পর্যন্ত ওনার দুর্নীতি। তিনি বরখাস্ত হওয়ার পরেও কলেজের প্যাড ব্যবহার করে বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন এবং বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করতেছেন যা সম্পুর্ন নিয়ম বহিঃভুত।
কলেজের ভারপাপ্ত অধ্যক্ষ ডাঃ আতাহার আলী জানান, আমাকে যে দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে তা আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করব।
কলেজে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, যারা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে কলেজ গবর্নিং বডি কাউকে ছাড় দেয়নি বা দিবেনা।
এছাড়া ও বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে রয়েছে ভুয়া ভাউচার বানিয়ে অর্থ আত্মসাৎ বারংবার কলেজ সংস্কারের নামে ও মিথ্যা মামলা পরিচালনার নামে অর্থ আত্মসাৎ যাহা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে,২০১৪ খন্ডকালীন প্রভাষক জসিম উদ্দিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বেতন ভাতা না দেওয়ায় মামলা দায়ের করেন ও মামলার রায়ও পান তিনি, রায়কে অমান্য করেন মোজাম্মেল হক,যার মামলা নং সিআর ১১৩/২০১৪। ২০১০ সালে ১১ জন প্রভাষক বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। ২০১০ সালে জেলা শিক্ষা অফিসার তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বরাবর দাখিল করেন।
স্বাক্ষর জ্বাল, কলেজের প্যাডসহ নানান অনিয়মের কারণে ডাঃ মোজাম্মেল হকের চেম্বারে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি, পরে মোবাইল ফোনে একাধিক কল করলে তিনি কল রিসিভ করেনাই।
ডাঃ মোজাম্মেল হকের নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারনে কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম অনেকটাই মূখ থুবড়ে পড়েছিলো। তাকে বরখাস্ত করার ফলে শিক্ষক অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এসএ/