শিক্ষিকাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী কারাগারে


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


শিক্ষিকাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী কারাগারে

পটুয়াখালীর দুমকিতে প্রকাশ্য দিবালোকে কলেজ শিক্ষিকা অপহরণ চেষ্টা মামলার প্রধান আসামী সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ জাহান মানিকের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। 

বুধবার (১৮ মে) পটুয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন। বাদি পক্ষের কৌশলী ও পিপি এড. মো. নজরুল ইসলাম বাদল এ তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন। এর আগে মামলার অপর আসামী যথাক্রমে মানিকের সহদর পুলিশ সদস্য আরিফুর রহমান ও মনির হোসেন জামিনে আছেন। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, চলতি বছরের ১২মার্চ বেলা সাড়ে ১২টায় পটুয়াখালীর লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের কলেজ গেইট এলাকা থেকে দুমকি এল. এ.এম ইউনাইটেড মহিলা কলেজের পদার্থ বিদ্যা বিষয়ের প্রদর্শক তাহেরা আলী রুমাকে ফিল্মি স্ট্যাইলে আসামীরা প্রকাশ্যে অপহরণ করে মাহেন্দ্রা যোগে পালানোর চেষ্টা করে। পথিমধ্যে শ্রীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. হুমায়ুন কবির মৃধাসহ স্থানীয় জনতার প্রতিরোধের মুখে ভিকটিমকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় ভিকটিম তাহেরা আলী রুমা বাদি হয়ে তার সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ জাহান মানিকসহ ৭/৮ জন দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে দুমকি থানায় একটি অপহরণ চেষ্টার মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর আসামীরা আত্মগোপণে থেকে ২,৩,৪ নম্বর আসামী জামিন পেলেও প্রধান আসামী অনুপস্থিত ছিল। পরবর্তিতে হাইকোর্টের শর্তসাপেক্ষ (১ মাসের) সময়সীমা শেষে বুধবার নিম্ন আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। 

ভিকটিম কলেজ শিক্ষিকা তাহেরা আলী রূমা অভিযোগ করেন, কলেজের রুটিন ক্লাশ শেষ করে বেলা সোয়া ১২টায় বাসার উদ্দেশ্যে কলেজ গেটে যাওয়ার পথে পূর্বথেকে ওঁথপেতে থাকা তার সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ জাহান মানিক ও তার সহদর আরিফের নেতৃত্বে ৭/৮জনের একটি অপহরণকারিচক্র আকস্মিক তাকে টেনে হিচড়ে মাহেন্দ্রায় তুলে লেবুখালীর দিকে যাচ্ছিল। এসময় তার ডাকচিৎকার শুনে উপজেলার থানা ব্রিজ এলাকার লোকজন ধাওয়া করে প্রায় ৩কি.মিটার দুরত্বের লালখা ব্রিজ এলাকায় অপহরণকারীদের মাহেন্দ্রা আটকে দিলে ধরা খাওয়ার আশঙ্কায় তাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চক্রটি পালিয়ে যায়। স্থানীয় শ্রীরামপুর ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে কয়েকজন অটো-মোটরসাইকেল চালক অপহরণকারীদের ধাওয়া দিলে তাকে (ভিকটিম) রাস্তায় ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. আল-ইমরানের কাছে অভিযোগটি অবহিত করত: দুমকি থানায় অপহরণ চেষ্টার মামলার এজাহার দাখিল করেন।

তাহেরা আলী রুমা জানায়, লেবুখালী ইউনিয়নের আঠারগাছিয়া গ্রামের মৃত শাহজাহান বিডিআরের ছেলে যৌতুক লোভী সাইফুল্লাহ জাহান মানিকসহ তার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠসহ দাম্পত্য কলহের জেরে দু’বছর পূর্বে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের সংসারে একছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তিনি দুমকিস্থ ভাড়া বাসায় থেকে নিয়মিত কলেজে চাকুরি করছেন। ডির্ভোসের পর সাবেক স্ত্রী তাহেরা আলী রুমার বাবা’র অবসর ভাতা-পেনশনের প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতছাড়া হওয়ায় (পবিপ্রবি’র সিএসই অনুষদের ডীন মো. আলী আজগর ভূঁইয়া’র সম্পর্কে শশুর) আরও বেপরোয়া হয়ে সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ মানিক নানা ভাবে তাকে (রুমা) হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে দুমকি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হলে আসামীরা তাকে জীবনের তরে শেষ করে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী সাইফুল্লা জাহান মানিকের নেতৃত্বে তার সহদর ছোটভাই আরিফসহ ৬/৭জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্য দিবালোকে কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে অপহরণ চেষ্টা চালায় ও মারধর করে। 

এসএ