ফেসবুকে প্রেম, বিয়ে-পাচার-দেহব্যবসা ও গণধর্ষণ!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ফেসবুকে প্রেম, বিয়ে-পাচার-দেহব্যবসা ও গণধর্ষণ!

তিন বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পাবনার এক তরুণীর সাথে পরিচয় হয় সোহেলের। বিয়ের আগে ও পরে ২ বার ভারতে পাচার করা হয় ওই তরুণীকে। ভারতে যাওয়া ও পালিয়ে আসার সময় দুই বার তাকে ধর্ষণ করে পাচারদলের সদস্যরা। টাকার জন্য তাকে আটকিয়েও রাখেন তারা। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে এসে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় আশ্রয় গ্রহণ করেন ওই তরুণী।

আলোচিত ধর্ষণ ও মানব পাচার মামলার প্রধান আসামি সোহেল মিয়া (২৭) কে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। সে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়ার ছেলে।

মঙ্গলবার (২৪ মে) বেলা ১০ টায় মৌলভীবাজার সদর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৯ সিপিসি-১ হবিগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল। আটককৃত সোহেল মিয়া নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়া আহমদের ছেলে। মঙ্গলবার দুপুরে র‍্যাব-৯ সিপিসি-১ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ক্যাম্প কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান।

মামলা সুত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৩ বছরে পুর্বে পরিচয় ও প্রেম। তারপর প্রেমিক হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়ার ছেলে সোহেল ঐ তরুণীকে অবৈধ ভাবে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। সেখানে তরুণীকে দিয়ে জোর পুর্বক দেহ ব্যবসা করেন প্রেমিক সোহেল। ৮/৯ মাস পর ভারতের কলকাতা থেকে কৌশলে একই পথে দেশে পালিয়ে আসে তরুণী। কিছু দিন পর দেশে আসেন সোহেল। এরপর চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ আদালতে সোহেল-তরুণী বিয়ে হয়। ইতোমধ্যে তরুণী গর্ভবতী হয়।তারপর আবারও প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেন প্রেমিক থেকে স্বামী হওয়া সোহেল। তরুণীকে পাচারের জন্য আবারও পাচারকারীদের সাথে যোগাযোগ করে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে পাঠিয়ে দেয় স্বামী সোহেল। গত ১৩ মে ভোরে পাচারকারীরা তাকে ওই উপজেলার দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়। এ সময় তরুণীকে ধর্ষণ করেন ওই পাচার দলের সদস্যরা। তরুণী ভারতে প্রবেশের পর বুঝতে পারেন তার স্বামী তাকে পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। ১৫ মে রাতে আবারও তরুণী কৌশলে দেশে দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর এবার আশরাফুল ইসলাম নামে অপর এক পাচারকারী দলের সদস্য তাকে ধর্ষণ করেন। টাকার জন্য তরুণীকে ১৫ মে থেকে আটকিয়ে রাখেন পাচার দলের সদস্যরা। সেখান থেকেও কৌশলে পালিয়ে পাটগ্রাম থানায় আশ্রয় গ্রহণ করে শাম্মি।

এরআগে শনিবার পাটগ্রাম থানা পুলিশ দিনভর অভিযান চালিয়ে পাচারদলের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, মোকছেদুল হক, চম্পা বেগম নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।  

এসএ/