মাহুতের ইঙ্গিতে হাতির চাঁদাবাজি!
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের দোকানে দোকানে চলছে হাতি দিয়ে অর্থ আদায়। মাহুতের (হাতির মালিক) ইঙ্গিতে চলছে হাতির এক প্রকার ভয়ভীতি এবং হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়।
পৌর শহরের দোকানে দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিশালদেহী একটি হাতি। পিছু পিছু হাঁটছে ছোট্ট আকৃতির আরেকটির হাতি। দোকানসহ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া শিক্ষার্থী, পথচারীসহ কোনো যানবাহনই ছাড় পাচ্ছে না। পিঠে ভাব নিয়ে বসে আছেন মাহুত। আর এই মাহুতের নির্দেশেই এক দোকান থেকে আরেক দোকানে যাচ্ছে হাতি দুটি। তারপর শুঁড় এগিয়ে দিচ্ছে দোকানির কাছে। শুঁড়ের মাথায় টাকা গুঁজে না দেওয়া পর্যন্ত শুঁড় সরাচ্ছে না হাতিটি। টাকা না দিলে উল্টো ভয় দেখাচ্ছে মাহুত। এভাবেই অভিনব কৌশলে হাতি দিয়ে চলছে চাঁদাবাজি। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।
শুক্রবার (২ি৭ মে) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে দুটো হাতি দিয়ে টাকা তুলছেন মাহুত। সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে শুরু করে দোকানের ধরণ অনুযায়ী ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে চাঁদা। শুধু দোকানেই সীমাবদ্ধ নয়, সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের পথ রোধ করেও টাকা তুলতে দেখা যায় এই মাহুতকে।
পৌর কালীবাড়ী বাজারের একটি মুদি দোকানে হঠাৎ বিশাল দেহের হাতিটি মাহুতের ইশারা ইঙ্গিতে শুঁড় এগিয়ে দিল দোকানের মধ্যে। সঙ্গে সঙ্গে দোকানদার ২০ টাকা হাতিটির শুঁড়ে গুঁজে দিলেন।
টাকা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওই দোকানদার বলেন, টাকা না দিলে হাতিটি যাবে না। তাছাড়া অনেক সময় ভাঙচুরও করে। এজন্য ঝামেলা হওয়ার আগেই টাকা দিয়ে বিদায় করলাম।
ব্যবসায়ী শঙ্কর মজুমদার, দুলাল সাহা, রতন শীলসহ ব্যবসায়ীরা জানান, মাঝে-মধ্যেই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতি নিয়ে এসে চাঁদা আদায় করেন তারা। প্রতিটি দোকান থেকে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হয়। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরিয়ে নেওয়া হয় না। অনেক সময় সাধারণ মানুষ, শিশু বাচ্চাসহ মহিলা ক্রেতারা হাতি দেখে ভয় পান। এতে ব্যবসায়ের ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা চন্দ্রনাথ গুপ্ত বলেন, দোকান থেকে চাঁদা উঠানো শেষ হলে হাতিগুলো রাস্তায় নামে। শুধু দোকানই না এরা চলন্ত গাড়ি থামিয়ে দিয়ে চাঁদা আদায় করেন। এতে করে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
হাতির মাহুত বলেন, হাতির ভরণপোষণের জন্য সবাই খুশি হয়ে কিছু টাকা দেয়। কেউ খুশি হয়ে টাকা দিলে তা আবার চাঁদাবাজি হয় কীভাবে? তবে আমরা কারো উপর কোনো ধরনের জোর করি না; যার ইচ্ছে দেয় মন না চাইলে দেয় না।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, হাতি দিয়ে টাকা তোলার বিষয়ে এখনো কেউ আমাদের কিছু জানায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসএ/