নওগাঁয় ঝড়-বৃষ্টিতে ধানের চরম ক্ষতি


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


নওগাঁয় ঝড়-বৃষ্টিতে ধানের চরম ক্ষতি

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় এবারের ঝড় ও বৃষ্টিতে ধানের চরম ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। এতে শুধু ধানেই কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ৫২ কোটি টাকার উপর। ঝড়ে ও বৃষ্টির পানিতে পাকা ধান নুয়ে পরার কারনে অনেকেই জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেননি। ফলে জমিতেই ধান পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে ক্ষতির পরিমান আরো অনেক বেশি হবে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জনবাণীকে বলেন, “চলতি বোরো মৌসুমে এই উপজেলায় ১৮হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করেছিলেন কৃষকরা। শুরু থেকেই ধান গাছে তেমন রোগ-বালাই না থাকায় ধানের ফলন ভাল হবে এমনটি আসা করা হয়েছিল।” 

তিনি আরো বলেন, “গত বোরো মৌসুমে প্রাপ্ত উৎপাদন ফলন অনুযায়ী চলতি মৌসুমে রোপিত ধানে উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছিল ১লক্ষ ১৬হাজার ৭৭২ মেট্রিকটন। কিন্তু ঝড় ও বৃষ্টির কারনে সময় মতো কৃষকরা পাকা ধান কাটতে না পারায় পানিতে নুয়ে পরার কারনে ফলন বিপর্যয় দেখা দেয়। এতে প্রাপ্ত উৎপাদন অর্জিত হয়েছে ১লক্ষ ১হাজার ৯৪৪ মেট্রিকটন। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ১৪হাজার ৮২৮ মেট্রিকটন কম। তিনি জানান,বর্তমান ধানের বাজার দর অনুযায়ী শুধু ফলন বিপর্যয়ে প্রায় ৫২ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।” 

তবে কৃষকরা বলছেন, এই ক্ষতির পরিমান প্রায় দ্বিগুন হবে। অনেক কৃষকরা ধান কাটতেই পারেননি। ফলে জমিতেই পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া চরা মুজুরি দিয়ে ধান কাটার কারনে আরো অনেক বেশি লোকসান হয়েছে।

রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের করজগ্রাম কৃষক কাজী আনিছুর রহমান বলেন, “তিনি ১২বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছিলেন। ঝড়-বৃষ্টিতে ধান নুয়ে পরার কারনে এবং সময় মতো শ্রমীক না পাওয়ায় ৫ বিঘার জমির ধান পচে নষ্ট হয়ে গেছে।”
 
একই গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেনের অবস্থা একই। তিনি ৪ বিঘা জমির ধান কাটতে পারেনি। 

বড়গাছা ইউনিয়নের মালশন সরদার পাড়া গ্রামের মিজান সরদার বলেন, “তিনি ৮ বিঘা জমির ধান কাটতে পারেনি।” 

কালীগ্রাম খন্দকার পাড়ার কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, “তিনি সাড়ে ২৩ বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছিলেন। ঝড়-বৃষ্টিতে ধান নুয়ে পরার কারনে এবং সময় মতো শ্রমিক না পাওয়ায় ২১ বিঘা জমির ধান পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে ওই ২১বিঘা জমির একটি ধানও কেটে ঘরে তুলতে পারেননি।”

একই গ্রামের কৃষক ইন্তাজ আলী জানান, “তিনি ১৮বিঘা জমির মধ্যে সোয়া চার বিঘা জমির ধান কাটতেই পারেননি। সব ধান পচে নষ্ট হয়ে গেছে।”

সিম্বা গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম ও মিরাটের কৃষক আলাউদ্দীন বলেন, “বিশেষ করে বিল এলাকায় যে সকল জমি রয়েছে সেগুলোর অধিকাংশ জমির ধান পানিতে তলে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের মতে,এই ঝড়-বৃষ্টিতে কৃষি অফিসের জরিপ অনুযায়ী যে পরিমান ক্ষতি ধরা হয়েছে তার দ্বিগুন হবে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দ্বাড়াতে সরকারের প্রতি অহ্বান জানিয়েছেন।”

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন জনবাণীকে বলেন, “কৃষকদের ক্ষতির বিষয়টি আমরা মাথায় নিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারীভাবে সহায়তা করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

এসএ/