গ্রামীণ অর্থায়ন দারিদ্র্য হ্রাসের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মােকাবিলায় আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় আন্তর্জাতিক স্রোতধারায় সম্পৃক্ত হবার মধ্য দিয়ে ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং নিরক্ষরতা- মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বস্তুত স্নায়ুযুদ্ধের অবসানে বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের সুযােগ এনে দিয়েছে। বিশ্বায়নের কারণে বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি প্রায় একটি অভিন্ন অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিযােগিতাপূর্ণ বাজার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমস্যাসমূহ যথাযথভাবে চিহ্নিত করে তা সমাধানের সঠিক দিকনির্দেশনা উদ্ভাবন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্পে বিনিয়ােগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশে। উচ্চ ফলনশীল ধানবীজের ব্যবহার এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এছাড়া সাম্প্রতিককালে তেলবীজ, আখ, তুলা, আলু ও গম উৎপাদন বুদ্ধি পেয়েছে নাটকীয়ভাবে। তাই বিশ্বায়নের এ যুগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়ােগের যে অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এতে দ্বিমতের কোনাে অবকাশ নেই। গ্রামীণ অর্থায়ন দারিদ্র্য হ্রাস এবং গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এটি একটি প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। তা গ্রামীণ জনগণের সম্পদ এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন বাড়াতে উৎপাদনের বিভিন্ন উপাদানকে সংযুক্ত করে। গ্রামীণ অঞ্চলে আর্থিক পরিষেবার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মের একাধিক দিক এবং বিভিন্ন আয় স্তরের বাসিন্দাদের তথ্য প্রচার করে এবং অর্থের সঠিক ব্যবহার করে গ্রামীণ উন্নয়ন সম্ভব।
আর্থিক পরিষেবাগুলো যা কৃষি এবং অ-কৃষি উভয় ক্রিয়াকলাপকে সক্ষম এবং গতিশীল করে। গ্রামীণ অর্থায়ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামীণ অর্থায়ন দারিদ্র্য থেকে গ্রামীণ মানুষকে বেরিয়ে আসতে আরো বেশি ব্যবহার করা যেতে পারে। তা দেশের টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে কাজে লাগতে পারে। এটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে নগদ লেনদেন, অর্থ প্রদান, আমানত, ক্রেডিট এবং পেনশনের মতো ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপে অ্যাকসেস দেয়। এ ধরনের পরিষেবাগুলোয় অ্যাকসেস গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহযোগিতা করে। গ্রামীণ এলাকায় বিশ্বের দরিদ্র জনসংখ্যার একটি বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ রয়েছে। ফলে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণের অন্যতম চাবিকাঠি হলো এ ধরনের স্থানগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন। অন্যদিকে গ্রামীণ অর্থায়ন বলতে তহবিল সংগ্রহ এবং পাশাপাশি গ্রামীণ জনগণকে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় কৃষকদের অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সঙ্গে তাদের আর্থসামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য নগদ অর্থ প্রদানকে বোঝায়। গ্রামীণ ফাইন্যান্সের মধ্যে রয়েছে সব বিভাগীয় কাঠামোগত ও অনানুষ্ঠানিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রামীণ দরিদ্র মানুষকে একাধিক আর্থিক সুবিধা প্রদান করে এবং অন্যান্য ছোট ও মাঝারি গ্রামীণ সংস্থা এবং কৃষি প্রক্রিয়াকরণ সংস্থাগুলোকে আরো উল্লেখযোগ্য আর্থিক পরিষেবা প্রদান করে। ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান যা আর্থিক সংস্থা থেকে শুরু করে গ্রামীণ ব্যাংক এবং কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন ব্যাংক, সেইসঙ্গে দেশীয় ঘূর্ণনশীল সঞ্চয় এবং ক্রেডিট ইউনিয়নগুলো গ্রামীণ অর্থ প্রদান করে।গ্রামীণ অর্থ দারিদ্র্য হ্রাস, প্রবৃদ্ধি, জীবন যাত্রার মান এবং গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা।উৎপাদন বাড়াতে এবং গ্রামীণ এলাকায় উপকারভোগীদের আয় ও জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য উৎপাদনের পরিবর্তনশীলতার সমন্বয়ে এটি তাৎপর্যপূর্ণ।
কৃষি অর্থ, ক্ষুদ্র অর্থায়ন এবং এসএমই ফাইন্যান্স গ্রামীণ অর্থায়নের অংশ হিসেবে কাজ করে। কৃষি অর্থ বলতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ, অর্থায়ন এবং কৃষি ফসল এবং পশুসম্পদ বীমাসহ কৃষি উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং বাণিজ্যিকীকরণের জন্য আর্থিক সেবার একটি পরিসীমা বোঝায়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের কৃষি খাত ছিল দেশের প্রধান অর্থনৈতিক ইঞ্জিন। এতে জিডিপির প্রায় ৬০ শতাংশ অবদান ছিল। বাংলাদেশে মানুষের জীবিকা, চাকরি ও জিডিপি অবদানের জন্য কৃষি গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি কার্যকরী হাতিয়ার, খাদ্যের পর্যাপ্ততা বৃদ্ধি করে এবং বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাস করে। যা-ই হোক, শিল্পে পর্যাপ্ত অর্থায়ন এবং সমসাময়িক প্রযুক্তির অভাবের কারণে জিডিপিতে কৃষির অবদান অপর্যাপ্ত এবং অসন্তোষজনক ছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, কৃষি খাতে ব্যাংকঋণ এবং এনজিওর ঋণ দেশের সামগ্রিক কৃষি উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কৃষি ক্ষেত্রে আরো অর্থায়ন দেশের সমষ্টিগত কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করবে। বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, গ্রামীণ অর্থায়ন, যেমন ব্যাংক ও এনজিও কৃষি খাতে ঋণ, বাংলাদেশের জিডিপিকে প্রভাবিত করেছে। আরো দেখা গেছে, গ্রামীণ অর্থায়ন মানুষের আয় বৃদ্ধি, উদ্যোক্তা, কৃষিজমির বৃদ্ধি এবং তাদের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতি জনগণের সন্তুষ্টিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে। বাংলাদেশের গ্রামীণ আর্থসামাজিক উন্নয়নে গ্রামীণ অর্থের প্রভাব নির্ণয়কারী কৃষিঋণ, কৃষিতে বিনিয়োগ এবং নতুন ব্যবসা শুরু করার মতো বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। গ্রামীণ বহুমাত্রিক দিকগুলোর সঙ্গে গ্রামীণ অর্থায়নের ইতিবাচক প্রভাব বাড়ানোর জন্য কাঠামোগত এবং নীতি সংস্কার এবং অন্যান্য বড় পরিবর্তনের দরকার রয়েছে।
দেশের গ্রামীণ এলাকায় জীবনযাত্রার মানে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে, তার পেছনে কাজ করেছে গ্রামীণ অর্থায়নের ব্যাপক উন্নয়ন, কৃষির আধুনিকায়ন, যোগাযোগ এবং পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি, কৃষি সম্পৃক্ত অন্যান্য খাতের বিস্তার, তথ্য ও প্রযুক্তির প্রসার এবং প্রবাসী আয় বৃদ্ধি ইত্যাদি। তবে এ সবগুলোকে উন্নত এবং কার্যকর করতে গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষ ভূমিকা রেখেছে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় গ্রামীণ অর্থায়ন ব্যবস্থাকে আনুষ্ঠানিক আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। তাই গ্রামীণ অর্থায়ন ব্যবস্থাকে সরকারকে আরো বেশি নজর দিতে হবে, যা দেশের মানুষের সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।আশার কথা হচ্ছে, গ্রামেও এখন অর্থপ্রবাহ বেড়েছে। গ্রামীণ যোগাযোগব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎ, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট প্রভৃতি সুবিধা ক্রমেই বদলে দিচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির চেহারা। বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের অধিকাংশই গ্রাম্য এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত হলে উৎপাদন, রপ্তানি আয় এবং বহুমুখী কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর এই সুযোগের সুবাদে গ্রামীণ উন্নয়নে প্রভাব পড়বে। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, ১০ বছরের ব্যবধানে অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গ্রামের জনবলও বেড়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় রূপান্তর ঘটেছে অর্থ সরবরাহের ক্ষেত্রে। আগে গ্রাম থেকে অর্থ শহরে চলে যাওয়ার যে রীতি প্রচলিত ছিল, এখন হচ্ছে তার উল্টোটা। এখন বিত্তবানরা শহর থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ পাঠাচ্ছে গ্রামে। শহরের মানুষেরা আরো সুখে থাকার জন্য নিজ গ্রামে মাছ চাষ, সবজি চাষ, ফলবাগান, গবাদি পশুর খামার, এমনকি ক্ষুদ্র এবং কুটির শিল্পও স্থাপন করছে।
গ্রামীণ অর্থায়ন বলতে অর্থ সংগ্রহ করা এবং গ্রামীণ অঞ্চলে তাদের আর্থসামাজিক কাজ এবং কার্য সম্পাদনের জন্য গ্রামীণ এলাকায় ঋণ দেয়াকে বোঝায়। এর লক্ষ্য হলো, সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের আর্থিক পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন করা যাতে তারা আয়-উৎপাদনমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারেন। গ্রামীণ অর্থায়ন বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনের একটি উন্নয়ন কৌশল, বিশেষ করে মহিলাদের গ্রামীণ কাজে উৎসাহিত করে দ্রুত এবং বাস্তব ফলাফল প্রদান করে দারিদ্র্য কমিয়ে থাকে। গ্রামীণ অর্থায়ন প্রায়ই এ ভিত্তির ওপর ভর করে গ্রামীণ মানুষকে তহবিলের অ্যাকসেস দিয়ে দারিদ্র্যের চক্র থেকে মুক্ত হতে সহযোগিতা করে থাকে। আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারীরা গ্রামীণ অর্থের ধারণা এবং গ্রামীণ অর্থায়নকে ডিজিটাল প্লাটফর্মের অন্তর্ভুক্তির কাজটা সহজ করেছে। তা খুবই ইতিবাচক। ক্ষুদ্রঋণ, বিনিয়োগ ও বীমার মতো গ্রাহককেন্দ্রিক আর্থিক সুবিধা প্রদান এবং অন্যান্য আর্থিক সেবার মাধ্যমে নতুন নতুন পণ্য গ্রামীণ অর্থনীতিতে সংযুক্ত করে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন করতে পেরেছে সরকার। অধিকন্তু গ্রামীণ অর্থ হলো স্থানীয় ব্যাংকিং (অর্থাৎ সঞ্চয় গোষ্ঠী) ও সমবায়ের মতো সম্প্রদায়ভিত্তিক আর্থিক প্রোগ্রামগুলোকে সমর্থন করার জন্য একটি মূল প্রক্রিয়া, তা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করেছে। ফলে গ্রামীণ জনসংখ্যার বেশি লোক সঞ্চয় গোষ্ঠীর মতো অনানুষ্ঠানিক আর্থিক লেনদেনে নিয়োজিত হওয়ায় আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে একীকরণের হার ত্বরান্বিত হতে পারে।
গ্রামমুখী এসব কর্মকান্ডের ফলে গ্রামেও স্থানীয় অনেক পণ্য তৈরি হচ্ছে। ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৬৮ শতাংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এখনো কৃষি কার্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল।
এভাবে বাংলাদেশের মোট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কৃষি বিভাগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত। এটি খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা, দারিদ্র্য হ্রাস এবং আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি অপরিহার্য সামাজিক খাত। সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ব্যাংকিং ক্ষেত্র হলো গ্রামীণ এবং কৃষি অর্থায়ন, যা আর্থিক ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়নে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে।
এখন গ্রামীণ অর্থনীতিতে পেশা বাছাইয়ে বহুমুখিতা সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাম্য এলাকায়, অন্তত উপজেলা পর্যায়ে শিল্প-কারখানা-গার্মেন্ট-কুটিরশিল্প স্থাপনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। বেসরকারি উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে জমি, ব্যাংক লোন, পরামর্শ এবং প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামীণ বিনিয়োগ বাড়লেই ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এলাকায় কাজ পেলে মানুষ আর শহরমুখী হবে না। শহরে মানুষের অযাচিত চাপ কমবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেমন রয়েছে অসংখ্য সমস্যা, তেমনি রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। তবে বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি প্রায় একটি অভিন্ন অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতােমধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্র মুক্তবাজার অর্থনীতি গ্রহণ করেছে। তাই বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় কোনাে দেশের পক্ষেই এককভাবে সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক সহযােগিতার। পাশাপাশি রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ও বিরােধী দলকে শুধু দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও ইস্যুতে ঐকমত্যভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
লেখক: রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট।
এসএ/