কুমিল্লায় নির্বাচন কমিশন অসহায়: মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যদি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার না থাকে কোনভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয় তার প্রমান হয়ে গেছে কুমিল্লার নির্বাচনে। আপনারা দেখেছেন কুমিল্লার নির্বাচনে কি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার ব্যর্থ হয়েছেন একজন সংসদ সদস্যকে নির্বাচন চলাকালীন কুমিল্লা থেকে বের করতে। সেখানে নির্বাচন কমিশন যে অসহায় সেটাই প্রকাশ পেয়েছে। তিনি যদি এটা পারতেন তাহলে বোঝা যেত ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নির্বাচন কেমন হতো।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিকালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে মহিলা দলের সাথে এক মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনই নির্বাচন কমিশন যে প্রথমেই একটি জিনিস দেখালেন যে, একজন সংসদ সদস্যকে নির্বাচনী বিধিমোতাবেক এলাকা থেকে তাকে বাহিরে নিয়ে আসার। এই নির্বাচন কমিশন কিভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। আপনারা বুঝতেই পারছেন আমরা যে নির্বাচন কমিশন নিয়ে আগ্রহী ছিলাম না; আমরা বলেছি এই নির্বাচন কমিশনে যেই আসুক তারা কিছুই করতে পারবেনা যদি সরকার পরিবর্তন না হয়। যদি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার না থাকে কোনভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয় তার প্রমাণ হয়ে গেছে কুমিল্লার নির্বাচনে। সিতাকুন্ডে সংঘাতে কারা জড়িত সরকার সেটাকে খুজে বের করুক। এটা তাদের দায়িত্ব। মহানবী (সা:) কে নিয়ে কটুক্তির সরকারের উচিত ছিল স্পস্টভাবে বিষয়টির নিন্দা জানানো, এটা আমরা মনে করি। আমরা এটার নিন্দা জানিয়েছি। আজকে সেটা দেশের সকল ধর্মপ্রাণ মানুষকে তাদের অনুভুতিকে আঘাত করেছে। সরকারের উচিত ছিল এ ব্যাপারে কথা বলার।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর ব্যাপারে আপনার একটু পড়াশুনা করলে জানতে পারবেন। পদ্মা সেতুর প্রাথমিক চিন্তা ভাবনা বেগম খালেদা জিয়ার আমলেই শুরু হয়। ৯৪-৯৫ সালের দিকে প্রথম জাপান এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সাথে আলোচনা হয়। এরই প্রেক্ষিতেই পদ্মা সেতুর বিষয়টি শুরু হয়। আসল কথা সেটা না। আমাদের যেটা মূল বক্তব্য পদ্মা সেতু যে নির্মাণ ব্যয় সেটা ছিল সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার। সেটা ৩০ হাজার কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। আমাদের প্রশ্নটা ওই জায়গায়, ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায় কিভাবে ব্যয় করা হলো। পৃথিবীর কোথাও এত ব্যয়বহুল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। যারা এই নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত আছেন তারাও জানেন কিনা জানিনা। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে আমরা যাব কিনা সেটার ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য হলো, আ’লীগের নেত্রী বলেছেন পদ্মা সেতু থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়া যায়, তাহলে আপনার ঠিক হয়। যেখানে আপনি একজনকে হত্যা করার কথা বলছেন, হুমকি দেবেন আর তিনি সেখানে যাবেন এটা ভাবার কারন নাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নটা কার জন্য। এটা কি সাধারণ মানুষের জন্য। এটা কি মানুষের জন্য হচ্ছে নাকি তাদের জন্য হচ্ছে। যারা এই উন্নয়ন কর্মকান্ডে পরিকল্পনা দিচ্ছেন তাদের মূল উদ্দেশ্যটাই হচ্ছে এখান থেকে টাকা পাচার করা। চুরি করা, লুটপাট করা। উন্নয়ন বলতে তারা এই এটিকেই বোঝেন। বাংলাদেশের যে শতকরা ৪২ জন মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। বাংলাদেশের যে অনেক মানুষ ২ বেলা ২ মুঠো খেতে পারেনা। অনেক নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ করোনার সময় অস্বাভাবিক মুল্যবৃদ্ধির ফলে তারা তাদের ২ বেলা ঠিকমত ভালভাবে খেতে পারেনা সেটার জন্য এ কথাগুলো বলা হচ্ছে। আসলে বিষয়টা হচ্ছে কিভাবে জিনিসটাকে দেখছেন। আপনি যদি জিনিসটাকে জনগনের কল্যাণের জন্য দেখেন; তাহলে একটা বিষয়। কিন্তু আপনি নিজের পকেট ভারী করার জন্য করছেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ সভাপতি সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: জাফরুল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক মামুন অর রশিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুর, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি ফুরাতুন নাহার প্যারিস, সাধারণ সম্পাদক রুবিনা আক্তার, সহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠের নেতৃবৃন্দ।
এসএ/