বন্যায় ফুলছড়ির ৬৪ বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


বন্যায় ফুলছড়ির ৬৪ বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ

“চরের রাস্তা ডুবি গেছে, আমাদের স্কুলত পানি উঠেছে, আমরা ক্লাস করতে পারছি না, পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে।” এভাবে কথাগুলো বললেন গাইবান্ধার ফুলছড়ির পিপুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকবর হোসেন। শুধু পিপুলিয়া স্কুল নয়, বন্যার কারণে এরকম ৬৪টি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা শিক্ষা অফিস।

টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে প্রতিদিনই ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী এলাকা ছাড়াও বিস্তৃর্ণ জনপদে পানি ছড়িয়ে পড়ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে মঙ্গলবার বিকেলে ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তলিয়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এসব এলাকায় পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।

জিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাকাত আলী বলেন, “চরাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। বিদ্যালয়েও পানি উঠেছে। একমাত্র নৌকা অথবা কলা গাছের ভেলা ছাড়া যাতায়াতের কোন উপায় নেই। সে কারণে বিদ্যালয়ের পাঠদান ঘোষণা করা হয়েছে। যে কয়দিন পাঠদান বন্ধ থাকবে বিদ্যালয় খোলার সাথে সাথে বিশেষ ক্লাসের মাধ্যমে তা আমরা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো।”

এদিকে ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডবাড়ি, ফজলুপুর, ফুলছড়ি, কঞ্চিপাড়া, উদাখালী, উড়িয়া ও গজারিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৬ হাজার পরিবারের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সহস্রাধিক ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বসতবাড়ি, ফসলি জমি, নলকুপ বন্যার পানিতে তলিয়ে দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। বন্যার্তরা সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন উচু বাঁধ, সেতু এবং সড়কে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার বেশিরভাগ জায়গায় স্থানীয় ও আঞ্চলিক সড়কে বন্যার পানি উঠে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধের বিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম কারুজ্জামান জনবাণীকে বলেন, “এ পর্যন্ত উপজেলায় ৬৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কক্ষে ও আঙিনায় পানি উঠেছে। ফলে বিদ্যালয়ের পাঠদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর বিদ্যালয় খোলা হবে। তখন বিশেষ পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্ষতিটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।”

ফুলছড়ি উপজেলার পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম সেলিম পারভেজ জনবাণীকে বলেন, “উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত এলাকার খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। আমরা বন্যা কবলিতদের কাছে জরুরি সেবা ও ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

এসএ/