জীবননগর খাদ্য গুদামের দূর্নীতির সংবাদ প্রচারে বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পরিদর্শন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


জীবননগর খাদ্য গুদামের দূর্নীতির সংবাদ প্রচারে বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পরিদর্শন

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা-কর্মচারিদের যোগসাজসে অর্থ নিয়ে খাদ্য গুদামে নিন্মমানের চাউল ক্রয় করে ভাল চাউলের সাথে খাবার অযোগ্য নিন্মমানের চাউল ভেজাল করে ভিজিডি, ওএমএসে সরবরাহের অভিযোগে খাদ্য উপজেলা খ দ্য গুদাম কর্মকর্তা কাওসার হোসেন,অফিস সহকারী রাকিব, নৈশপ্রহরী মাসুদ ও গুদামের শ্রমিক সর্দার  রমজান আলীকে নিয়ে টেলিভিশন, জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয়  প্রত্রিকায় সংবাদ প্রচারের ২৪ঘন্টার মধ্যে জেলা ও বিভাগীয় কর্মকর্তারা সরেজমিনে তদন্ত শুরু করেন।  

জীবননগর খাদ্যগুদাম পরিদশন কালে বিভাগীয় আঞ্জলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আমি যতদিন এই বিভাগের দায়িত্বে আছি ততদিন কোনো দুর্নীতিবাজদের কেউ খাদ্য দপ্তরের কোথায় চাকুরী করতে পারবেন না। তদন্ত সাপেক্ষে দুর্নীতিবাজ অফিসারসহ সকলের দৃষ্টান্তমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে দুইজনকে এখান থেকে শরিয়তের দেয়ার নির্দেশ হয়েছে। বাকিরাও থাকতে পারবেনা। আপনারা সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ এই খাদ্য গুদাম আপনাদের তাই এখানকার ভালো খারাপ দুটোই দেখার দায়িত্ব আপনাদের মধ্যেও পরে। তাই যেকোনো অপরাধ দুর্নীতি আপনাদের চোখে পড়া মাত্র আমাকে জানাবেন।

এসময় জেলা খাদ্য কর্মকর্তা এ কে এম শহিদুল হক উপস্থিত ছিলেন। 

সংশ্লিষ্ট মিলারদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়,জীবননগর উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা কাওসার হোসেন, অফিস সহকারী রাকিব হোসেন যোগদানের পর থেকে নানা অজুহাতে চাউল সংগ্রহের সময় উপজেলার বিভিন্ন মিলারদের জিম্মি করে তাদের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। আর এই অর্থ কালেকশনের দায়িত্ব পালন করতে এলাকার স্থানীয় হওয়ায়  গুদামের নৈশপ্রহরী মাসুদ আলম।

অপর দিকে কোনো মিলার যদি তাদের কথামতো টাকা দিতে রাজি না হয়ে থাকতো তাদেরকে চাউলের সমস্যা বলে চাউল না নিয়ে হয়রানি করে থাকতেন তারা। অপর দিকে কেজি প্রতি  ৭-৮ টাকা নিয়ে অসাধু কিছু ব্যবসায়ীর সাথে হাত মিলিয়ে খাদ্য অনুপোযোগী লাল তামড়ী নিম্নমানের চাউল তারা লোক চক্ষুর অন্তরালে গুদামে  সর্দার রমজানের সহযোগিতায় কৌশলে গুদামজাত করে সুযোগমতো প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভালো চাউলের সাথে মিশিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ভিজিএফ,ভিজিডি হিসাবে বিতরণ করেন।

তাদের এই সেন্টিগ্রেডের কাছে শুধু মিলার নয় তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগন 

মাসুদ নৈশপ্রহরী হিসেবে চাকুরী করলেও  রাতে ডিউটি ফাকিঁ দিয়ে বাড়িতে রাত্রিযাপন করে।  মাসুদ স্থানীয় হওয়ায় কর্মকর্তা কাউসার ও রাকিবের সহযোগিতায় প্রতিদিন সকালে অফিসে এসে অফিসারদের মতো মিলারদের নিকট থেকে চাউল সংগ্রহ করে।

অনিয়ম ও দুনীতির দায়ে নাইডগাড মাসুদের গত ১৯জুন জীবননগর থেকে খুলনায় বদলি করেন কতৃপক্ষ তারপর মাসুদ খুলনাতে যোগদান না করে বহালতবিয়তে জীবননগর খাদ্যগুদামে কমরত রয়েছেন।

তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, সোমবারের ভেজাল করা সেই চাউল বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদে দেওয়া হয়েছে সেগুলো বুধবার সকালে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।

সরেজমিনে দেখা যায় জীবননগর খাদ্যগুদামে সকাল থেকে বিকাল পযন্ত গাড়ির লাইন। এ সময় কথা হয় এক গাড়ি চালকের সাথে তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ গাড়িতে ভারায় চাউল গুদামে নিয়ে আসি। গুদাম কর্মকর্তা কাউসার স্যার সারাদিন এখানে চাউল ভর্তী গাড়ি এখানে রেখে সন্ধ্যায় বলে চলবেনা। কিন্তু আবার পরদিন সকালে সেই চাউলই টাকার বিনিময়ে নিয়ে নেন গুদামে।
 
আমাদের প্রশ্ন চাউল যদি খারাপ হয় তো পরের দিন সেই চাউল কেমনে চলে?  উনারা তো ঠিক ঘুষ খেয়ে পেট ভরে। কিন্তু একদিন ভাড়া এনে দুইদিন ঘুরে হোটেলে খেয়েই আবাদের সব শেষ হয়ে । এই কষ্ঠের দাম কে দেবে ?

এদিকে নাইটগাড মাসুদ সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে খাদ্যগুদাম থেকে সটকে পড়েন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওবাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বিরক্ত বোধকরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তথ্য জানতে চেয়ে ফোন করলে ফোন রিসিভ না করার বিষয়ে বিরক্তেরস্বরে বলেন, আমি কোনো অপরিচিত নাম্বার রিসিভ করিনা। আর আপনারা সংবাদ প্রচার করেছেন আপনাদের কাজ শেষ। এ নিয়ে ভাবতে হবে না হবে সেটা কতৃপক্ষের দায়িত্ব।

জি আই/