টুং টাং শব্দে মুখরিত শ্রীপুরের কামার পল্লী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


টুং টাং শব্দে মুখরিত শ্রীপুরের কামার পল্লী

গাজীপুরের শ্রীপুরে টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে কামার পল্লী। ঈদকে সামনে রেখে  কামারা  কুরবানী পশুর জবাইয়ের সরঞ্জামাদি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় তাদের কাজের চাপও এখন একটু বেশি। দিনরাত সমান তালে কাজ করছেন তারা। আর মাত্র সপ্তাহখানেক সময় রয়েছেন ঈদের ব্যবসায়িক কর্ম ব্যস্ততায় সময় পার করছেন এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কামাররা। 

রবিবার (৩ জুলাই) সকালে উপজেলার বিভিন্ন কামারপল্লী ঘুরে তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় , ঈদুল আযহা এলেই তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে অনেক খুশি তারা। তবে ঈদ ছাড়া বাকি দিনগুলোতে তাদের তেমন একটা ব্যস্ততা থাকে না বললেই চলে। বছরের অন্যান্য সময় তাদের দিনে ২/৩ শত টাকা আয় হয় আবার কোন কোন দিন হয়ই না। সে তুলনায় এখন আয় কয়েকগুণ বেশি হচ্ছে বলে জানান তারা।

উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার নজরুল ইসলাম, “নামের এক কামার জানান, তাদের এ কাজে কয়লার চাহিদা রয়েছে প্রচুর। বর্তমানে কয়লা পাওয়া খুবই কঠিন। তাছাড়া দামও বেশি। পাশাপাশি লোহার দামও বেশি। সরকার সুলভ মূল্যে কাচাঁমাল কিনার নীতিমালাসহ আর্থিক সহযোগীতায় ঋণের ব্যবস্থা করে দিলে ব্যবসায়ীক ভাবে সফলতার মুখ দেখা যেত।”

উপজেলার বিভিন্ন বাজার  ঘুরে দেখা যায়, কেউ তৈরি করছে দা, কেউ বা তৈরি করছে চাপাতি আবার কেউ কেউ তৈরি করছে ছুরি। আবার কেউ পুরাতনগুলোর শান দিচ্ছেন এবং নতুনগুলো সারিবদ্ধভাবে দোকানের সামনে সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রির  উদ্দেশ্যে।

মাওনা চৌরাস্তার পূর্ব পাশে শ্রীপুর রোডের ফরিদ কর্মকার নামের এক কামার জানান, “নতুন চাপাতি ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা, দা ৬০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা, চাকু ১০০ টাকা থেকে ১২০টাকা, খুন্তি ৪০ টাকা, শাবল ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, হাতা ৫০ টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি।”

তিনি আরো জানান, “কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমাদের ব্যবসা এখন খুব ভালো চলছে। এ ঈদকে সামনে রেখে আমরা মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করে থাকি এবং সেখান থেকে উপার্জিত অর্থে আমরা সারা বছর সংসার চালাই। তাই এখন সারাদিন সারারাত ধরে আমরা পরিশ্রম করে যাচ্ছি। এতে আমাদের উপার্জনও মোটামুটি ভালই হচ্ছে।”

উপজেলার কেওয়া গ্রামের গৃহিনী সুমি আক্তার জানান, “নতুনের চাইতে তারা পুরানো দা ছুরি শান দিয়ে নতুন করে তোলার কাজে বেশি আগ্রহ নিয়ে এখন ভিড় জমাচ্ছেন কামারের দোকানে।” 

এ সময় দোকানে দা, বটি শান দিতে আসা কামাল হোসেন জানান, “কামারদের কাজের নির্দিষ্ট কোন মূল্য তালিকা না থাকার কারণে তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছে।”

শ্রীপুর উপজেলার কাও রাইদ বাজারের কর্মকাররা জানান, “অন্যান্য পেশার মতো আমাদের কোন সংগঠন না থাকায় আমরাও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছি। সরকার আমাদের পাশে এগিয়ে আসলে আমরা এই পেশায় কাজ করে আরো উন্নতি করতে পারতাম।”

এসএ/