রেলস্টেশনে বেপরোয়া কালোবাজারি চক্র, টিকিট পাচ্ছে না যাত্রীসাধারণ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ পিএম, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


রেলস্টেশনে বেপরোয়া কালোবাজারি চক্র, টিকিট পাচ্ছে না যাত্রীসাধারণ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী রেলস্টেশন ঘিরে কালোবাজারি চক্র বেপরোয়া হয়ে ওঠায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও যাত্রীরা গন্তব্যের টিকিট পাচ্ছেন না। ঈদ শেষে কর্মস্থলে যেতে ফিরতি অগ্রিম টিকিট বিক্রিতেও এমন ঘটনা ঘটছে।

অভিযোগ, কাউন্টার থেকেই টিকিট কালোবাজারিদের হাতে চলে যাচ্ছে। এ কারণে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও যাত্রীরা কাক্সিক্ষত টিকিট পাচ্ছেন না। রেল স্টেশনের টিকিট বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারীদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন রেলের টিকিটের কালোবাজারী সি-িকেট। কোথাও টিকিট না পেলেও সি-িকেটের সদস্যদের কাছে তিন-চারগুণ বেশি দামে টিকিট পাওয়া যায়।

ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনে সরেজমিন দেখা যায়, বুধবারের টিকিট সংগ্রহ করতে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিকাল থেকে স্টেশনের কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। এ সময় পৌরশহরের চকচকা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, ঈদে বাড়ী এসেছিলেন পরিবার নিয়ে। এবার কর্মস্থল ঢাকায় ফেরার পালা। এজন্য পরিবারের চারজনের ফেরতি টিকিটের জন্য আন্তঃনগর নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট নিতে আগেভাগেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন। টিকিট না পেলে কর্মস্থলে ফিরতে কষ্টে পড়তে হবে। টিকিট না পাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হন দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে কালোবাজারীদের কাছ থেকে টিকিট কিনছেন।

ফুলবাড়ী রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা গামী আন্তঃনগর নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন শ্রেণির টিকিট বরাদ্দ রয়েছে অনলাইনে ১০টি এবং অফ লাইনে ১০টি এবং এসি প্রথম শ্রেণির ৫টি অনলাইন ও ৫টি অফলাইনে। একতা এক্সপ্রেসে শুধুমাত্র শোভন শ্রেণিতে অনলাইনে ১৩টি ও অফলাইনে ১৩টি এবং দ্রুতযান এক্সপ্রেসে শোভন শ্রেণিতে অনলাইনে ১৩টি ও অফলাইনে ১৩টি বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়াও খুলনাগামী রুপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেসে শোভন শ্রেণিতে অনলাইনে ১৩টি ও অফলাইনে ১৩টি এবং রাজশাহীগামী রবেন্দ্র এক্সপ্রেস, তিতুমির এক্সপ্রেস ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেসে শোভন শ্রেণিতে অনলাইনে ১৩টি ও অফলাইনে ১৩টি টিকিটি বরাদ্দ রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ অন্তত চারভাগের একভাগ। তবে শুধুমাত্র নীলসাগর ট্রেনে এসি প্রথম শ্রেণির পাঁচটি আসন বরাদ্দ দেওয়া হলেও অন্য অন্তনগর ট্রেনে একটিও প্রথম শ্রেণির এসির একটি আসনও বরাদ্দ নেই।

রেল স্টেশনের টিকিট কাউণ্টারের বুকিং সহকারী রায়হান ফেরদৌস জনবাণীকে বলেন, “ফুলবাড়ীতে ৮টি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়ায়। ৮টি আন্তঃনগর ট্রেনের যে সংখ্যক আসন বরাদ্দ রয়েছে কাউণ্টারে তার চার-পাঁচগুণ বেশি যাত্রী টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ান। বরাদ্দকৃত টিকিট বিক্রির পর অন্যদের ফিরে যেতে হয়। আসন সংখ্যা কম হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।”

রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার ইস্রাফিল সরকার জনবাণীকে বলেন, “যাত্রীর চাহিদার তুলনায় আসন সংখ্যা বরাদ্দ কম থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে এই সমস্যা সমাধান হবে। টিকিট না পেয়ে প্রতিদিনই যাত্রী ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের করার কিছুই থাকছে না।”

এসএ/