ডাকঘরই ছিল তথ্য আদান-প্রদানের একমাত্র মাধ্যম


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ডাকঘরই ছিল তথ্য আদান-প্রদানের একমাত্র মাধ্যম

আধুনিকতার ছোয়া ও প্রযুক্তি ব্যাবহারের ফলে কমছে ডাক বিভাগের বিশেষ কর্ম ডাক নিয়ে যাওয়া ও রানারদের চিঠি বিলি করণ। বিগত দিনে প্রতিটি অঞ্চলের ডাকঘর থেকে ডাকের বস্তা বা ব্যাগ কাদে, হাতে হারিকেন ও লাটি হাতে করে পায়ে হেঁটে এক ডাকঘর থেকে অন্য ডাক ঘরে পৌঁছে দেয়ার চিত্র। খাকি পোষাকপরা ডাকপিয়ন কর্মীদের মাত্র দুই দশক আগে এমন চিত্র ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো এবং নিত্য দিনের সঙ্গী ও সম্পৃক্ততা ছিল শিক্ষিত সমাজের সাথে। প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতো সকল শ্রেণীর জনমানুষের সবকিছু আদান প্রদানের ক্ষেত্রে। 

প্রয়োজনীয় কাগজাদি, চিটি ও টাকা নিশ্চিন্তে পাঠানোর একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান ছিল ডাক ঘর বা পোস্ট অফিস। খুব বেশি ব্যাবহার হতো দেশ বিদেশ থেকে চিঠি, টাকা, কাগজপত্র, ছবি সহ বিভিন্ন পার্সেল পাঠানোর ক্ষেত্রে। এখনো চোখে পড়লে ঐ চিত্রটি প্রাচীন লোজনদের মনে করিয়ে দেয় বিগত দিনের অনেক মনের কথা। গুমরে মনে হয় ডাক নিয়ে আসা রানারের হাতের চিঠি গ্রহন করা। পাশাপাশি চিঠিটা পড়ার জন্য নিতে হতো একগ্রাম থেকে অন্যগ্রামের পড়তে পাড়া অভিজ্ঞ ব্যাক্তির বা মাস্টার মসাইয়ের কাছে। এছাড়াও বিগত দিনের যুগলপ্রেমের ইতিহাসও কম নয়।

প্রেমপত্র আদানপ্রদানে বিস্বস্থ্যায় কাজ করতো সেই ইতিহাস। এনিয়ে কবির গানের ছন্দ রয়েছে।

"নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম -
বন্ধুর কাছে মনের খবর কেমনে পৌছাইতাম"?

চিঠি আদান প্রদানের সুবিধা থাকায় অনেকে চিঠি লিখতে লিখতে কবি হয়ে যেতেন। এসব বর্তমান ডিজিটাল যমুনায় ও অনলাইন জগতের সুবিধায় প্রায় বিলুপ্ত হয়েছে তবে রয়েছে সরকারী কাগজাদি আদান প্রদানে যথেষ্ট ভুমিকা ডাক ঘরের। এর বাহিরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি আদান প্রদান, পার্সেল, ডাক টিকেট, সঞ্চয়পত্র, মানি টান্সফার, মানিওর্ডার সবগুলো সুবিধা থাকলেও ব্যবহার কারীদের ডাক ঘরে যেতে খুবকমই দেখা যায়, কেননা বাহিরে সবধরনের সুবিধা বা সেব পেয়ে থাকেন জনগন। 

প্রাচীন জনপ্রতিনিধি সদস্যের একজন বাবু উপানন্দ সরকার তিনি এ বিষয়ে বলেন, “বিগতদিনে ইউনিয়ন পরিষদের অফিসিয়ালি প্রায় সকল কর্যক্রমই আদান প্রদান হতো ডাকঘরের মাধ্যমে। কিন্তু সময় বর্মান সময়ে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে ডাক টিকেট আর সরকারী কাজ ব্যাতিত কোন কাছের তেমটি প্রয়োজন পড়ে না। বর্তমানে হাঠাৎ দেখা মিলে খাকি পোষাকের কর্মীদের।”

মধ্যনগর  ডাকঘরের ডাক সরবরাহকারী একজন আব্দুস সালম তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “আমি আগে পায়ে হেঁটে বা বাইসাইকেলে মোহনগঞ্জ থেক মধ্যনগরে ডাক নিয়ে প্রতিদিন আসাযাওয়া করতাম এখন গাড়ী বা সিএনজি যোগে যাতায়াত করি।”

হাওর গবেষক কবি সজল কান্তি সরকার বলেন, ‍“দেশ-বিদেশসহ হাওরে দুর্গম অঞ্চলে ডাকপিয়নের ভুমিকা একসময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটিই ছিল তথ্য ও অর্থ আদান-প্রদানের একমাত্র মাধ্যম।বর্তমানে ডাকপিওনের কাজ অনলাইনে সমাধান হয়ে যায় বিধায় কদর ও প্রয়োজন কমে গেছে।তবে ডাকপিয়ন এখনোও মানুষের মনের সাংস্কৃতিকবোধ ও ভাবজগতের ঐতিহ্য নিয়ে আমাদের মাঝে আছে।”

এসএ