প্রেমিকার অবস্থান কর্মসূচির মধ্যেই অন্য তরুণীকে নিয়ে চম্পট প্রেমিক


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


প্রেমিকার অবস্থান কর্মসূচির মধ্যেই অন্য তরুণীকে নিয়ে চম্পট প্রেমিক

নীলফামারীতে বিয়ের দাবিতে ৫ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা। এরই মাঝে এক শিক্ষকের মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে নিপুন রায় নামের ঐ প্রেমিক।  

শনিবার (২৩ জুলাই) রাতে  চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে জেলার ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নয়ানী বাকডোকরা বাবুপাড়া গ্রামে। নিপুণ রায় ওই গ্রামের বাবু ভূপেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাড়িতে অবস্থান নেওয়া তরুণীর (২১) বাড়ি সদর উপজেলায়। ১৯ জুলাই থেকে প্রেমিক নিপুণের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেন তিনি। তবে ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে টাকার বিনিময়ে মেয়েটিকে বাড়ি চলে যেতে বললেও যাননি। এদিকে ২৩ জুলাই রাতে বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের এক শিক্ষকের মেয়েকে (২২) বিয়ে করে এলাকা থেকে সটকে পড়েন প্রেমিক নিপুণ।

এক প্রেমিকাকে বাড়িতে রেখে অরেকজনকে বিয়ে ন্যাক্কারজনক দাবি করে স্থানীয়রা জানান, ‌‘একজন শিক্ষক ঘটনা জানার পরও কীভাবে তার মেয়ের সঙ্গে নিপুণের বিয়ে দিলেন? তার মেয়ের মতো আরেকটি মেয়ে নিপুণের বাড়িতে অবস্থান করছেন। অবস্থান নেওয়া মেয়েটির বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসার পর তার মেয়েকে বিয়ে দিতে পারতেন তিনি।’

এ বিষয়ে নিপুণকে বিয়ে করে পালিয়ে যাওয়া মেয়ের বাবা বলেন, “সব ঘটনা জানি। কিন্তু আমার মেয়ে যে এত খারাপ কাজ করতে পারে, সেটা ধারণা ছিল না। শুনেছি তারা বিয়ে করে এখন রংপুরে আছে। তবে বিয়ের সময় আমি ছিলাম না।”

নিপুণের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া তরুণী বলেন, “পাঁচ বছর আগে নিপুণের মামা কনকের মাধ্যমে নীলফামারী কলেজে আমার পরিচয় ঘটে। একপর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পড়াশোনার কারণে একসময় আমরা দুজন ঢাকা যাই। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আমরা দুজনে ঢাকার লোকনাথ মন্দিরে বিয়ে করি। বিয়ের সময় নিপুণের বান্ধবী ও তার স্বামী উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের পর নিপুণের এক বান্ধবীর বাসায় আমরা এক সপ্তাহ অবস্থান করি। এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রাত যাপন করি।”

তিনি আরও বলেন, “বিয়ের বিষয়টি চাকরি না হওয়া পর্যন্ত আমাকে গোপন রাখতে বলেছিল নিপুণ। কিন্তু কিছুদিন থেকে সে আগের মতো আর যোগাযোগ রাখছিল না। তাই তাকে ফোন দিয়েই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমি তার বাড়িতে চলে আসি। এখানে এসে নিপুণের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বাড়ির লোকজন ভালো ব্যবহার করলেও তারা আমার ফোনটি রেখে দেয়।”

তরুণীর দাবি, “নিপুণের পরিবার চাচ্ছে আমি এখান থেকে চলে যাই। তারা আমার পরিবারকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছে। তবে আমার পরিবার রাজি হয়নি। শুনেছি, সে নাকি অন্য প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে। কথাটা সত্য কি না জানি না। তবে সে অন্য মেয়েকে বিয়ে করলেও আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে হবে। আমি যদি স্ত্রীর মর্যাদা না পাই তাহলে আত্মহত্যার পথ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিপুণ রায়ের বাবা বাবু ভূপেশ চন্দ্র রায় বলেন, “মেয়েটি গত পাঁচ দিন ধরে আমার বাড়িতে আছে। মেয়েটি বলছে সে নাকি আমার ছেলেকে বিয়ে করেছে। মঙ্গলবার থেকে নিপুণের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। অন্যদিকে শুনছি ছেলে আরেক মেয়েকে বিয়ে করে পালিয়েছে। সে বাড়িতে এলেই তার মুখে বিস্তারিত শুনে সিদ্ধান্ত নেব।”

আরেক মেয়েকে বিয়ের বিষয়টি স্বীকার না করলেও নিপুণের চাচা জগদিশ চন্দ্র বলেন, “নিপুণকে বাড়িতে আসতে বলেছি। বাড়িতে অবস্থান নেওয়া মেয়েটির কথা সত্য হলে আমরা নিপুণের সঙ্গে তার বিয়ে দেব।”

বোড়াগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিমুন বলেন, “বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আজকের মধ্যে একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে আশা করছি।”

এসএ/