রুপালি ইলিশ ধরা দিয়েছে জেলেদের জালে


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


রুপালি ইলিশ ধরা দিয়েছে জেলেদের জালে

গত শীত মৌসুমের পর দেশের বৃহত্তম মৎষ্য বন্দর পটুয়াখালীর মহিপুর -আলিপুরে ইলিশের দেখা আর তেমন মিলেনি। তার উপর গত মে মাসের শেষ সপ্তাহ হতে গতকাল ২৩ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত চলে সমূদ্রে ইলিশ শিকারে সরকারের নিষেধাজ্ঞা। এসব মিলিয়ে বাজারে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলো মাছের রাজা ইলিশ।

কিন্তু মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরপরই মহিপুর ঘাটে ফেরা ফিশিং ট্রলারগুলো থেকে নামছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। আহরিত ইলিশের সিংহভাগই বড় ও মাঝারি সাইজ। এতে দামও ভালো পাচ্ছেন ট্রলার মালিকরা।

 তবে ধরাণা করা হচ্ছে এসব ট্রলার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগেই তারা সাগরে মাছ শিকারে নেমেছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর তীরে ফেরা ট্রলার থেকে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ নেমে আসায় ট্রলার মালিক এবং ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি দেখা গেছে।

আড়ৎ ব্যবসায়ী ও মহিপুরের ইউপি সদস্য জামাল হোসেন হাওলাদারের মতে, ‍“দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জেলেদের জালে ধরা পড়ছে কাঙ্ক্ষিত রূপালি ইলিশ। ট্রলারভর্তি ইলিশ নিয়ে কূলে ফিরছে জেলেরা। ইলিশের পাশাপাশি ধরা পড়ছ রূপচাঁদা, লইট্যাসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। আড়তগুলোতে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। ৭শ -৮শ তার চেয়ে বেশি ওজনের ইলিশ মন বিক্রি হচ্ছে ২৭ থেকে ৩০ হাজারে । তবে ট্রলার আরও ফিরা শুরু করলে এর দাম আরও কমবে বলে ধারণা ব্যবসায়ী মৎস্য ব্যবসায়ী কামাল হোসেনের।”

রবিবার (২৪ জুলাই) সকালে পটুয়াখালীর মহিপুরের মৎস্য আড়ৎ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। টানা কয়েক মাস পর কোলাহলহীন থাকা মৎস্য আড়ৎ জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে। অনেকদিনের হতাশার চিত্র সম্প্রতি পাল্টেছে। সাগর থেকে হাজার হাজার ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে একের পর এক ফিশিং ট্রলার।

ঘাট থেকে ঝুড়িতে করে মোকামে তোলা হচ্ছে নানা সাইজের ইলিশ। এক পোটলা মাছ উঠে এলেই ব্যবসায়ীদের হাক-ডাক, আগে দখল করতে হুড়োহুড়ি। ফলে সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম মৎষ্য বন্দরটি । কম-বেশি দামে বেচা-বিক্রি হওয়ায় কাজের লোকদেরও যেন দম ফেলার নেই। কেউ বরফ ভাঙ্গছে, কেউবা ইলিশ বিন্যাস করে বরফজাত করে রপ্তানির জন্য তৈরি করছে।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিতে অনেক ব্যবসায়ীরা ইলিশ বোঝাই ট্রাক সারি করে রেখেছেন। বিকেলে তা রওয়ানা হবে। তবে স্থানীয় মধ্যবিত্ত বা গরীব লোকজনের নাগালের বাইরে রয়েছে এসব মাছের দাম। প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যবসায়ী, জেলে ও ট্রলার মালিকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

মহিপুর মৎষ্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাসুম ব্যাপারির মতে, “নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে মৎস্য সংশ্লিষ্টরা ধার দেনায় চলেছে। মাছ বেশি পাওয়া অব্যাহত থাকলে দেনা শোধ করে ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে ব্যবসায়ী ও ফিশিং ট্রলার মালিকেরা।”

কলাপাড়া উপজেলা মৎষ্য কর্মকর্তা অপু শাহা জনবাণীকে বলেন, “দীর্ঘদিন পর আড়ৎ গুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য পেয়েছে। ফিরে আসা ট্রলারগুলো কাঙ্ক্ষিত মাছ পাচ্ছে। এতে মাছের পরিমাণ ও রাজস্ব উভয়ই বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি। গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ আহরণ বন্ধ ছিল। এ কারণে ইলিশের প্রজনন ও আকৃতি বেড়েছে অনেকগুণ। দুর্যোগকাল কাটিয়ে জেলেরা সাগরে নামছেন। আশা করছি এবারও ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবেন জেলেরা।”

এসএ/