এক যুগ ধরে ব্রীজ চেয়ে পেল ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো, জনমনে ক্ষোভ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


এক যুগ ধরে ব্রীজ চেয়ে পেল ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো, জনমনে ক্ষোভ

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরাতে ব্রীজের অভাবে এক যুগ ধরে ভৈরব নদীর উপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পাঁচ গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। সাঁকাটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুনরায় বাঁশ-কাঠ দিয়ে নতুন করে নির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও ঐ স্থানে গড়ে ওঠেনি গ্রামবাসীর কাঙ্খীত একটি সেতু। 

জানা গেছে, পাটাচোরা গ্রামটিতে রয়েছে একটি মাধ্যমিক ও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। গ্রামের তিন দিক দিয়ে মাথাভাঙ্গা ও ভৈরব নদী বয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে পাটাচোরা গ্রামবাসীর উদ্যোগে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায়  ভৈরব নদীর উপর নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। গ্রামটির তিন দিক দিয়ে মাথাভা্ঙ্গা ও ভৈরব নদী বয়ে যাওয়ায় ঐ গ্রামে যেতে দামুড়হুদা সদর অথবা কার্পাসডাঙ্গা ঘুরে যেতে হয়। যার ফলে ৮/১০ কিলোমিটার দুরত্ব বাড়ে।  

উপজেলার রঘুনাথপুর, সুবলপুর, বাস্তপুর, আমডাঙ্গা, কান্চনতলা ও কেসমতপুর গ্রামগুলো ভৈরব ও মাথাভাঙ্গা নদীর তীরবর্তী ২/৩ কিলোমিটারের মধ্যে হওয়ায় ঐ গ্রাম গুলোর ছাত্র-ছাত্রীরা পাটাচোরা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে থাকে। বিদ্যালয়টিতে প্রায় সাড়ে ৫০০ ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ ছাত্র-ছাত্রী মাথাভাঙ্গা-ভৈরব নদের অপর পাড়ের। ২০১০ সালে ঐ এলাকার স্কুলের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে গ্রামের মৃত গোলাম রহমান উদ্দোগ নিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা ব্যয় করে গ্রামবাসী বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে। 

সেতুটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবুর পরামর্শে সম্প্রতি দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের অর্থায়নে ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হযরত আলি প্রায় ২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নতুন ভাবে বাঁশ কাঠ দিয়ে পুনরায় সাকোটি নির্মাণ করে দেয়। এই উপর দিয়ে যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ।

গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজাহান আলি জানান, ‍“বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অর্ধেকের বেশি ভৈরব ও মাথাভাঙ্গা নদীর অপর পাড়ের। আগে নৌকায় পারাপার হতো তাতে প্রায় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটতো। দুর্ঘটনা এড়াতে গ্রামের মরহুম গোলাম রহমানের উদ্দ্যেগে গ্রামবাসীর উদ্দোগে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বাশের সাকো নির্মাণ করা হয়। নদীর অপর পাড়ে বিদ্যালয়ের অর্থে সড়কের জন্য ৪ কাটা জমি ক্রয় করা হয়। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলি আজগার টগরের নিকট ঐ স্থানে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানানো হলে তিনি আশ্বাস দিলেও কোন কাজ হয়নি। দীর্ঘ একযুগ পেরিয়ে গেলেও ঐ বাশেঁর সেতু দিয়ে চলাচল করছে। সাকোটি না হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ধেকে নেমে আসতো।”
 
দামুড়হুদা সদর ইউপি সাবেক সদস্য ঐ গ্রামের কুতুব উদ্দীন ও মোশারফ হোসেন মুসা জানান, “প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে পাঁচ গ্রামের সহস্রাধিক লোক যাতায়াত করে থাকে। বর্তমান সরকারের আমলে আমাদের গ্রামের মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।শুধুমাত্র ভৈরব নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ করা হলে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার আর কোন সমস্যা থাকবেনা। আমরা ঐ স্থানে একটি ব্রীজ নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহনের চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ আলি আজগার টগরের নিকট আহবান জানাচ্ছি।” 
 
দামুড়হুদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলি জনবাণীকে বলেন, “বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারন মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে সাকোটি নির্মাণ করায় তারা অল্প সময়ে স্কুলে পৌছাতে পারবে। তাদের আর অনেক রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হবেনা এতে ঐ গ্রামে যাতায়ত কারীদের অনেক সময় বাঁচবে।

এসএ/