Logo

পেঁয়াজের আগুনে পুড়ছে বাজার, সমাধান কোথায়?

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ নভেম্বর, ২০২৫, ১৮:২৬
25Shares
পেঁয়াজের আগুনে পুড়ছে বাজার, সমাধান কোথায়?
ছবি: সংগৃহীত

বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁঝ যেন থামছেই না। এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়ে পৌঁছেছে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানির ঘোষণা দিলেও, বাস্তবে এলসি খোলা হয়েছে খুবই কম—প্রায় দুই হাজার আবেদন থেকেও খোলা হয়েছে মাত্র দুইশ টনের মতো।

বিজ্ঞাপন

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একের পর এক ঘোষণা, শুল্ক প্রত্যাহার—কোনোটিই বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারেনি। রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০৪-১০৫ টাকা, আর খুচরায় তা ১৩০ টাকায় পৌঁছে গেছে।

পেঁয়াজের উৎপাদন ও চাহিদায় বড় ধরনের ঘাটতি না থাকলেও প্রতি বছরের শেষ দিকে এসে কেন হঠাৎ আগুন লাগে দামে? এর বড় কারণ, এ সময়টাতেই শেষ হতে থাকে পণ্যটির মৌসুম। ফলে সংরক্ষণের সুবিধার অভাবে তৈরি হয় ঘাটতি।

বিজ্ঞাপন

ক্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সমস্যা সমাধানের উদ্যোগটা আগে থেকেই নিতে হবে। শেষ সময় এসে কোনো উদ্যোগ নিলে ভোক্তরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে। মানুষের পকেট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার যে প্রবণতা, এটি প্রশাসন বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানে। তাই আগে থেকে তাদের উদ্যোগ নেয়া দরকার ছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফোকাস ঠিক করা দরকার, কখন আমদানি উন্মুক্ত করা যাবে, কখন বন্ধ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার। পরিকল্পনা না থাকার কারণে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয়, তখন আমাদের টনক নড়ে। এটার কারণে ব্যবসায়ীরা ‍সুযোগ পেয়ে যান। আমাদের মজুদ পণ্যকে একই চ্যানেলে ডিসট্রিবিউশনে নিয়ে আসা যায় কিনা, সেই উদ্যোগুলো দেখি না।

বিজ্ঞাপন

নভেম্বরে পেঁয়াজের দাম—তিন বছর ধরেই ‘শতকে’

ট্যারিফ কমিশনের তথ্য বলছে—

২০২৩ সালের নভেম্বর: গড়ে ১১৫ টাকা

বিজ্ঞাপন

২০২৪ সালের নভেম্বর: ১৩০ টাকা

২০২৫ সালের নভেম্বর: এখন ১০৫–১৩০ টাকা

অর্থাৎ তিন বছর ধরেই এ সময় পেঁয়াজের দাম শুঁয়োপোকার মতো হু হু করে বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত গেলো বছরের একই সময়ের তুলনায় পেয়াজ আমদানি নেমেছে ২০ ভাগের ১ ভাগে। গেলো অর্থবছরে যেখানে অক্টোবর পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টন, সেখানে এই অর্থবছরে এখনো পর্যন্ত হয়েছে মাত্র ১৩ হাজার টন। একই সময়ে এলসি বা ঋণপত্র খোলা কমেছে প্রায় ৯৯ শতাংশ। ২০২৪ অক্টোবর পর্যন্ত হয়েছিলো ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৭ মেট্রিক টনের, যা এবার মাত্র ২০৩ টন। যদিও এলসি খোলার জন্য এই সময়ে আবেদন জমা পড়েছে ২৮শ'র মতো, যা মূলত রমজান ঘিরেই করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেলো অর্থবছরে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৮২ হাজার টন। আর উতপাদন হয়েছে ৩২ লাখ টনের মত।

বিজ্ঞাপন

অর্থাৎ উৎপাদন যথেষ্ট হলেও সঠিক মজুদ, সংরক্ষণ সুবিধা, সাপ্লাই চেইনে বিশৃঙ্খলা আর ব্যবসায়ীচক্রের ‘দামে খেলা’—সব মিলিয়েই পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল।

জেবি/এসডি
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD