আবারও আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি শেখ হাসিনা, সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, ২৫শে ডিসেম্বর ২০২২

আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি পদে দশম বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। আগামী তিন বছরের জন্য দলটির কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে টানা তিন বারের মতো পুননির্বাচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। এই অধিবেশনে কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন দলটির নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে।
কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার নাম সভাপতি পদে প্রস্তাব করা হয়। ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু নাম প্রস্তাব করেন। এতে সমর্থন দেন মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। সভাপতি পদে আর কেউ প্রার্থিতা না করায় সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনার নাম সভাপতি হিসেবে ঘোষণা হয়। পরে উপস্থিত কাউন্সলররা করতালি ও শ্লোগানের মাধ্যমে তাকে অভিনন্দন জানান।
১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন শেখ হাসিনা। দলে এখনও তার বিকল্প তৈরি হয়নি বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।
সারা দেশে দেশে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও সভাপতিমণ্ডলীর পরিষদের সদস্যরা সম্মেলনে যোগ দেন। এছাড়া দলের সাধারণ সম্পাদকসহ দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বেলা তিনটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে বসে কাউন্সিল অধিবেশন। শুরুতে বর্তমান নির্বাহী কমিটির মুলতবি বৈঠক হয়। এরপর নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ূনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন মঞ্চে আসেন। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা মঞ্চ থেকে নেমে সামনের আসনে বসেন। এরপর শুরু হয় নেতা নির্বাচন।
কাউন্সিল অধিবেশন শুরুর পর ৮ বিভাগের ৮ জন কাউন্সিলর বক্তব্য রাখেন। বাজেট উপস্থাপন এবং সংশোধিত ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র উপস্থাপন করার পর সেগুলো অনুমোদন হয়। তারপর বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করে।
নতুন সভাপতি পদে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করা হলে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করা হয়। কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচিত নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে সারা দেশ থেকে আসা প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর অংশ নেন। দলটির ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের সর্বময় ক্ষমতা দলীয় প্রধানের হাতে অর্পণ করা হয়। তিনি দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মৎস্যজীবি লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতি লীগ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সারাদেশের সাংগঠনিক জেলা থেকেও নেতাকর্মীদের ঢল নামে সম্মেলনে।
আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। কমিশনের অপর দুই সদস্য হলেন— প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা সম্মেলনস্থলে প্রবেশের পর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। একই সময় দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একই সময় প্রতিটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জাতীয় পতাকা এবং সাধারণ সম্পাদক দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এসময় পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত।
পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আরও কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে দুপুরের খাবার ও নামাজের বিরতি দেওয়া হয়।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হয়। ওই সম্মেলনেও শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

তারেক রহমানকে চীন সফরে আমন্ত্রণ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির

শহীদদের দলীয়করণ করলে তাদের অবমূল্যায়ন করা হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

খেলাধুলা ও ক্রীড়াঙ্গন রাজনীতি মুক্ত থাকা উচিত : মির্জা ফখরুল

তারেক রহমানের দেশে ফেরার নেপথ্যে নিরাপত্তা ও নির্বাচন
