জুডিশিয়াল সার্ভিসে ইবি শিক্ষার্থীদের ঈর্ষণীয় সাফল্য, সুপারিশপ্রাপ্ত ৭


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৫০ অপরাহ্ন, ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৩


জুডিশিয়াল সার্ভিসে ইবি শিক্ষার্থীদের ঈর্ষণীয় সাফল্য, সুপারিশপ্রাপ্ত ৭
ছবি: জনবাণী

ষোরশ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের (বিজেএস) সহকারী জজ নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়েছে গত ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রকাশিত ফলাফলে ১০৪ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবার সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন ৭ জন। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ফারজানা ইভা, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের সেলিনা শেলী, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ফাতেমা জান্নাত, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের রুবাইয়া ইয়াসমিন ও মারিয়া সুলতানা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আরিফ হোসেন এবং আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আসাদুজ্জামান নুর। তাদের এ সাফল্যে উচ্ছসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 


তবে জুডিশিয়ারির পথচলা সহজ ছিলোনা বলে মনে করেন আসাদুজ্জামান নুর। তিনি বলেন, অসচ্ছল পরিবার থেকে এসেছি। তারপর যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন বাবা মারা যান। তখন থেকেই দেখে আসছি মা কত শক্ত হাতে সংসারের যাবতীয় পালন করে আসছেন। আমার প্রতিটা পদক্ষেপে আমার মা আমাকে আশা জাগিয়েছেন। এছাড়াও বিভাগের শিক্ষক ও ক্লাসরুম সংকটসহ নানা বাধা বিপত্তিতে অনার্স লাইফ ঘেরা ছিলো। এই প্রতিকূলতার মধ্যেও শিক্ষকদের সাপোর্ট এবং পরিকল্পনা মাফিক সর্বোচ্চ চেষ্টার ফলস্বরূপ আল্লাহ তা আলা আমাকে এই অবস্থানটা দান করেছেন ৷ 


আরিফ হোসেন বলেন, আমার কখনই স্বপ্ন ছিলো না যে আমি জজ হতে পারবো বা আমার দ্বারা কখনো জজ হওয়া সম্ভব। বাবার স্বপ্ন ছিলো আমাকে বড় আলেম বানাবে। তার ইচ্ছা অনুযায়ী আমি মাদরাসা থেকে দাখিল এবং আলিম শেষ করি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর বড়ভাই ও আপুদের সফলতা আমাকে জজ হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে। তখন থেকে আমার এই জীবনযুদ্ধ শুরু। দ্বিতীয় বর্ষ থেকে আমি একাডেমিক এর পাশাপাশি বড়ভাইদের সান্নিধ্যে থেকে জুডিশিয়ারির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করি। আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমার গর্ভধারিণী মা, পিতৃতুল্য বড় ভাই, চাচা, মামা, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের যারা আমাকে এ সুদীর্ঘ পথ চলায় অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।


শিক্ষার্থীদের এ সাফল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল উচ্ছাস প্রকাশ করে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের এই সাফল্যে আমি খুবই আনন্দিত। কোভিড পরবর্তী থেকে বিজেএস এর রেজাল্ট তুলনামূলক ভালো হয়েছে। আশাকরি পরবর্তীতে আমাদের আরো বেশী সংখ্যক শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হবে। 


এছাড়াও তিনি বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট উৎসাহিত করি। সবসময় শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেয় তারা যেনো প্রথম বর্ষ থেকেই পড়াশোনা শুরু করে। বিজেএস সহ অন্যান্য চাকরি পরীক্ষার জন্য রেগুলার ১০-১২ ঘন্টা পড়াশোনা করতে পারলে যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অবশ্যই ভালো করবে।


আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোছাঃ সৈয়দা সিদ্দীকা বলেন, আমাদের পরিচয় শিক্ষার্থীদের সফলতায়। বিজেএসে আজকে ৭ জন পরবর্তীতে আরও বাড়বে। আমাদের অংশগ্রহণ যেনো দিন দিন বৃদ্ধি পায় সে চেষ্টা আমাদের করতে হবে। 


তিনি বলেন, আনন্দের বিষয় হচ্ছে সুপারিশপ্রাপ্ত ৭ জনের মধ্যে ৫ জনই আমাদের মেয়ে। এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আমাদের মেয়েরা যে এগিয়ে যাচ্ছে এটাই প্রমাণ। আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।


জেবি/এসবি