সবজির বাজার চড়া, দাম কমেছে মুরগির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৭ অপরাহ্ন, ৩০শে মে ২০২৫

বৃষ্টির অজুহাতে সরবরাহ ভালো থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম চড়া। গত সপ্তাহের
থেকে সব ধরনের সবজি কেজিতে প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে মুরগির দাম বাড়েনি গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবছরই কোরবানির আগ মুহূর্তে মুরগির দাম তুলোনা মূলক ভাবে কিছুটা কম থাকে, এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে মুরগির দাম কম থাকাতে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: সবজির বাজার চড়া, দাম বেড়েছে ডিম ও মাংসের
গত সপ্তাহের শুরুতে ডিমের দাম কিছুটা বেশি ছিল। তিন দিন আগে দাম ডজনে পাঁচ টাকা কমে বর্তমান দরে এসেছে। তবে এটিও বেশ চড়া দাম বলা যায়। কারণ, এক মাস আগের তুলনায় এখন ডজনে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (৩০ মে) রাজধাণীর বিভিন্ন বাজারে দেখে গেছে চলমান বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঈদের আগমূহুর্তে তুলনামূলক ভাবে বাজারে ক্রেতার সাংখ্যা ছিল কম। আবার বাজারে আনেক দুকান বন্ধও দেখা গেছে।
সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, রাতে বৃষ্টি না থাকায় পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ ছিল। আর যে কারণে পণ্য আনা নেওয়াতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি। তবে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সবজি আসছে কম। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় দামে খুব একটা প্রভাব পড়ছে না।
ডিমের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমান বাজারে সবজির দাম শীত মৌসুমের তুলনায় কিছুটা বেশি। এ কারণে ডিমের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। সে তুলনায় ডিমের উৎপাদন বাড়েনি। এ কারণে ডিমের দাম কিছুটা বাড়তি রয়েছে।
এদিকে ডিমের দাম বেশি থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। গত বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২৩০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে।
এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বাজারগুলোতে বেগুন প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে সাজনা ১০০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, কাঁচা আম ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে শীতকালীন সবজি ফুলকপি ছোট ৫০ টাকা পিস, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৭০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ১৫ টাকা, ধনেপাতা ২৮০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস, ক্যাপসিকাম ২৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা আঁটি, পালং শাক ১৫ টাকা আঁটি, কলমি শাক ২০ টাকা আঁটি, পুঁই শাক ৩০ টাকা আঁটি ও ডাটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে দেখা যায় মাছ ও মাংস অনেকটা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৪০০–৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৮০০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে বাজারে সরু বা মিনিকেট চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মূলত বোরো ধান থেকে তৈরি নতুন চাল বাজারে আসায় চালের দাম কমেছে। খুচরা পর্যায়ে বেশির ভাগ মিনিকেট চালের কেজি এখন ৭৫ টাকার আশপাশে। এই দাম আগের সপ্তাহের মতোই।
আরও পড়ুন: আবারও বাড়তে শুরু করেছে সবজি-পেঁয়াজ ও ডিমের বাজার
গত বৃহস্পতিবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল ৭৫ টাকা ও রসিদ মিনিকেট চাল ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম রাখা হচ্ছে ৮২ টাকা। মাসখানেক আগেও পুরানো মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৮৫ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া নাজিরশাইল চাল মানভেদে ৮০ থেকে ৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৫৮ টাকা ও স্বর্ণা ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি আলু ২০–২৫ টাকা, দেশি রসুন ১২০–১৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, বিক্রি হয়েছে।
এসডি/