আজ বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস

আজ (১৫ অক্টোবর) বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে এ দিবস। সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে হাত পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব তুলে ধরতে ২০০৮ সাল থেকে দিনটি উদ্যাপন করা হয়ে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য— “It Might Be Gloves. It’s Always Hand Hygiene”, যার বাংলা অর্থ, ‘পরিষ্কার হাত, নিরাপদ জীবন; সংক্রমণ রোধে নিয়মিত হাত ধোয়া একটি শক্তিশালী অভ্যাস।’
বিজ্ঞাপন
বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্লাভস বা অন্য কোনো সুরক্ষা উপকরণ কখনোই হাত ধোয়ার বিকল্প নয়। বরং হাত পরিচ্ছন্নতাই সংক্রমণ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। হাত ধোয়া একটি ছোট্ট অভ্যাস হলেও এটি দিতে পারে বড় ধরনের সুরক্ষা। নিয়মিত হাত ধোয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা সম্ভব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, নিয়মিত হাত ধোয়া ডায়রিয়াজনিত রোগের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগের ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে তাদের অনুপস্থিতি ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাওয়া যায়।
বিজ্ঞাপন
ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি, কাশি, জ্বরসহ নানা সংক্রমণ বেড়ে যায়। এ সময় নিয়মিত হাত ধোয়া অত্যন্ত কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখ, নাক বা চোখে হাত দেওয়ার আগে সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুলে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
তারা পরামর্শ দিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হলে টয়লেট ব্যবহারের পর, খাবার আগে, হাঁচি-কাশির পর এবং বাইরে থেকে ঘরে ফিরে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধোয়া জরুরি। পানি না থাকলে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার কথাও উল্লেখ করেছেন তারা। পাশাপাশি গ্লাভস ব্যবহারের আগে ও পরে হাত ধোয়াও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুরা ছোটবেলা থেকেই যদি হাত ধোয়ার অভ্যাসে অভ্যস্ত না হয়, তাহলে পরবর্তী জীবনে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা কমে যায়। তাই স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে খেলাধুলা, পোস্টার, নাটিকা বা ইন্টার্যাকটিভ কার্যক্রমের মাধ্যমে হাত ধোয়ার গুরুত্ব শেখানো প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন
তাদের আরও পরামর্শ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সাবান ও বিশুদ্ধ পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা উচিত। পাশাপাশি ‘হাত ধোয়ার কর্নার’ স্থাপন এবং শিক্ষকদের নিয়মিত তদারকি করলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই অভ্যাস গড়ে তোলা সহজ হবে।
বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, “পরিষ্কার হাত কেবল নিজের নয়, আশপাশের সবার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়। হাত পরিচ্ছন্ন রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা মানে সংক্রমণ থেকে নিজেকে ও অন্যকে সুরক্ষিত রাখা।”
বিজ্ঞাপন
ছোট্ট এই অভ্যাসের মাধ্যমেই প্রতিদিন লাখো প্রাণকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব। তাই আজ বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে সবাইকে আহ্বান— “নিয়মিত হাত ধোব, নিজেকে ও সমাজকে রাখব নিরাপদ।”