আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির এক সপ্তাহের মধ্যেই আগুন শাহজালাল বিমানবন্দরে

মাত্র কয়েকদিন আগেই গর্বে ভরে উঠেছিল বাংলাদেশের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। যুক্তরাজ্যের পরিবহন দপ্তরের (ডিএফটি) আন্তর্জাতিক মূল্যায়নে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পেয়েছিল ৯৩ শতাংশ নম্বর। কার্গো নিরাপত্তায় এই স্কোর ছিল শতভাগ—যা বাংলাদেশের বিমান পরিবহন খাতে এক ঐতিহাসিক স্বীকৃতি।
বিজ্ঞাপন
সেই সাফল্যের আনন্দ এখনো কাটেনি, এমন সময়ই নেমে এলো ভয়াবহতার ছায়া। শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে লাগে আগুন। মুহূর্তেই জ্বলে ওঠে বিদেশি আমদানি পণ্যভর্তি গুদাম, ছড়িয়ে পড়ে তীব্র ধোঁয়া।
ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট, সঙ্গে নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা—সবাই জীবন বাজি রেখে আগুন নেভানোর লড়াইয়ে নামে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও তীব্র ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যায়, স্থগিত হয় ফ্লাইট ওঠানামা।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এমন ঘটনা কি শুধুই দুর্ঘটনা, নাকি নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনো অদেখা ফাঁকফোকর? কারণ গত ১২ অক্টোবর বেবিচকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ডিএফটির এই মূল্যায়ন আসলে যুক্তরাজ্যের এক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা যাচাই প্রক্রিয়া, যেখানে বিদেশি বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রী ও কার্গো নিরাপত্তা মানদণ্ড কেমনভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা খুঁটিয়ে দেখা হয়।
বিজ্ঞাপন
এই মূল্যায়নের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। ২০১৬ সালে কার্গো নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের পণ্যবাহী ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে ২০১৭ সাল থেকে বেবিচক আধুনিক ডিটেকশন সিস্টেম, প্রশিক্ষিত জনবল এবং আন্তর্জাতিক মানের স্ক্রিনিং প্রযুক্তি যুক্ত করে। এই কঠোর পরিশ্রমের ফলেই শতভাগ নিরাপত্তার স্বীকৃতি এসেছিল। কিন্তু সেই শতভাগ পরিশ্রমের ফলই আগুনে পুড়ে কালো ধোঁয়া হয়ে উড়ে গেল।