টিনশেড ঘর থেকে জেন-জিদের আইকন হয়ে ওঠা কে এই হাদি?

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জানাজার পর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাশে সমাহিত হবেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে—কে ছিলেন ওসমান হাদি এবং কেন তার এত জনপ্রিয়তা?
বিজ্ঞাপন
ঝালকাঠি জেলার নলছিটিতে ১৯৯৩ সালের ৩০ জুন জন্মগ্রহণ করা হাদি সীমিত আয়ের পরিবারে বড় হয়েছেন। তার শৈশব কেটেছে টিনশেডের ছোট ঘরে, বাবা মাদরাসা শিক্ষক। প্রাথমিক শিক্ষা নেন নলছিটি ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায়, পরে ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম সম্পন্ন করেন। উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।
রাজনৈতিক জীবনে হাদি প্রথম আলোচনায় আসে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে গঠিত সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চ-এর মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত হন। জুলাই শহীদদের স্বীকৃতি, দাবিদাওয়া ও আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হাদির নাম জাতীয় রাজনীতিতে আলোচিত হয়ে ওঠে।
বিজ্ঞাপন
সাহিত্যিক হিসেবেও হাদি ছিলেন সক্রিয়। ‘সীমান্ত শরিফ’ ছদ্মনামে কবিতা লিখে শোষণ, নিপীড়ন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেন। ২০২৪ সালে প্রকাশিত তার কাব্যগ্রন্থ ‘লাভায় লালশাক পুবের আকাশ’ পাঠকমহলে প্রশংসিত হয়।
পেশাগতভাবে হাদি ইংরেজি শিক্ষকতা করতেন। সর্বশেষ তিনি ইউনিভার্সিটি অব স্কলারস-এ শিক্ষক হিসেবে কাজ করছিলেন এবং ঢাকার রামপুরা এলাকায় বসবাস করতেন।
আরও পড়ুন: ওসমান হাদির জানাজা আজ কখন কোথায়
বিজ্ঞাপন
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে হাদি বিএনপিসহ অন্যান্য দলকে সমালোচনা করে একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ২০২৪ সালে ঢাকা-৮ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। নির্বাচনী প্রচারণায় সরাসরি জনসংযোগ, ‘চা–সিঙাড়া’ আড্ডা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন তার জনপ্রিয়তা বাড়ায়।
শহীদ হাদির হত্যাকাণ্ড সারাদেশে তরুণ প্রজন্ম ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছে। তার জীবন ও কর্মকাণ্ড আজও অনেকের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে আছে।







