তীর্থ উৎসবে অর্ধলক্ষাধিক খ্রিস্টভক্তের অংশগ্রহণে আলোর মিছিল

এবারের তীর্থ উৎসবের মূল সুর হলো- আশার তীর্থযাত্রী, ফাতেমা রাণী মা মারিয়া।’ প্রতি বছর ধর্মীয় চেতনায় এ বছরও শান্তিপূর্ণভাবে তীর্থযাত্রা সম্পন্ন হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দেশের রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টভক্তদের জন্য পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে ও অনুকরণে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা বারমারী সাধু লিওর খ্রিস্টান ধর্মপল্লীতে স্থাপন করা হয়েছে ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থান। এই তীর্থ (৩০ ও ৩১ অক্টোবর) দুই দিনব্যাপী বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়েছে।
এভারের তীর্থস্থানে দেশী-বিদেশী তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারের মতো। এই তীর্থস্থানটিকে আন্তর্জাতিক তীর্থস্থানে রূপান্তরিত করতে ২ কিলোমিটার পাহাড়ি টিলায় ক্রুশের পথ স্থাপন করা হয়েছে ৪৮ ফুট উঁচু মা মারিয়ার মূর্তি। এছাড়াও যীশু খ্রিস্টের দুটি বড় ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে এখানে।
বিজ্ঞাপন
রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টভক্তদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৯৮ সালে পাহাড়ঘেরা মনোরম পরিবেশে এই স্থানটি তীর্থস্থান স্থাপন করা হয়।
এদিন খ্রিষ্টভক্তরা নিজেদের পাপ মোচনে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিলে অংশগ্রহণ করে প্রায় ২ কিলোমিটার পাহাড়ি ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে মা-মারিয়ার মূর্তির সামনের বিশাল প্যান্ডেলে সমবেত হয়ে নির্মল হৃদয়ের অধিকারিণী, ঈশ্বর জননী, খ্রিষ্টভক্তের রানি, স্নেহময়ী মাতা ফাতেমা রাণীর কর কমলে ভক্তিশ্রদ্ধা জানায় ও তার অকৃপণ সাহায্য প্রার্থনা করেছেন।
বারমারী সাধু লিওর খ্রিষ্টান ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার তরুণ বনোয়ারী বলেন এবারের তীর্থ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আমেরিকান কূটনীতিক প্রতিনিধি পোপের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ কেভিন স্টুয়ার্ট র্যান্ডাল।
বিজ্ঞাপন
ফাদার বিশপ পনেন পল কুবি বলেন, প্রয়াত পূর্ণ পিতা পোপ মহোদয় প্রোভাম সিস্ট এই বছরকে যুবলি বছর হিসাবে ঘোষণা করেছেন। খ্রিস্টভক্তরা আনন্দ উৎসব করার জন্য এসেছে তাদের মন পরিবর্তন করার জন্য পাপ মোচন করে শান্তি প্রার্থনা করেন।
বারোমারী মিশনের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ( প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ আবু বকর সিদ্দীক ও শেরপুর জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োজন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন শেরপুর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, তরফদার মাহমুদুর রহমান।
উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকা শহর থেকে ২২০, ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর থেকে প্রায় ১০০, শেরপুর জেলা শহর থেকে ২৫ ও নালিতাবাড়ী উপজেলা শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তরে বাংলাদেশ-ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তঘেঁষা সবুজ শ্যামলীময় পাহাড়ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের অপুর্ব লীলাভূমি বারমারী খ্রিষ্টধর্মপল্লীতে এ তীর্থস্থানের অবস্থান।
ময়মনসিংহ ধর্ম প্রদেশের ১৪টি ধর্মপল্লীর ও সারাদেশের হাজার হাজার খ্রিষ্টভক্তদের প্রাণের দাবি ছিল মা মারিয়াকে ভক্তি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উপযুক্ত স্থান লাভের। আর বারমারীতে এ স্থান পেয়ে খ্রিষ্টভক্তরা যেন মহাখুশি।









