Logo

হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:১৯
52Shares
হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আজ রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। কোনো সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগে এটি বাংলাদেশের প্রথম রায়, যা ইতোমধ্যে দেশজুড়ে নজর কাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

এ মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করে মামলাটির বিচার শুরু করে। এসব অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নির্দেশ, প্ররোচনা, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, ব্যর্থতা এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দাবি।

তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা পাঁচ অভিযোগ গুলো হলো-

১. গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্য

বিজ্ঞাপন

২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে হত্যাকাণ্ড, হত্যার চেষ্টা ও নির্মম নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। আসামিদের প্ররোচনা, উসকানি ও অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থতাকে এ অভিযোগে প্রধান ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২. হেলিকপ্টার-ড্রোন থেকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ রয়েছে— আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার ও ড্রোন থেকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ বাস্তবায়নে কামাল ও মামুন তাদের অধীন বাহিনীকে নির্দেশনা দেন। প্রসিকিউশনের দাবি, এটি সরাসরি মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের পরিকল্পিত অংশ।

৩. রংপুরে ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা

১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে— এ হত্যাকাণ্ড তাদের জ্ঞাতসারে এবং নির্দেশে সংঘটিত হয়েছে। নির্দেশ, সহায়তা, সম্পৃক্ততা ও ষড়যন্ত্র— এই চার ভিত্তিতে তিনজনকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

৪. চাঁনখারপুলে ছয় ছাত্র হত্যাকাণ্ড

৫ আগস্ট ঢাকার চাঁনখারপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন ছাত্র নিহত হন। তিন আসামির বিরুদ্ধেই অভিযোগ— তাদের নির্দেশ, সহায়তা ও উসকানির মাধ্যমেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

৫. আশুলিয়ায় হত্যা ও লাশ পোড়ানো

বিজ্ঞাপন

একই দিন আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা, পাঁচজনের লাশ পুড়িয়ে ফেলা এবং গুরুতর আহত আরেক ব্যক্তিকে আগুনে পোড়ানোর ঘটনার জন্যও তিন আসামিকে দায়ী করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়— এই ঘটনাগুলো ছিল পরিকল্পিত, এবং এতে তাদের সরাসরি নির্দেশ ও সম্পৃক্ততা ছিল।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা হিমালয়ের মতো দৃঢ়, ক্রিস্টালের মতো স্বচ্ছ প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করেছি। পৃথিবীর যেকোনো আদালতেই এই প্রমাণ অপরাধ প্রমাণে যথেষ্ট।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন এর সম্পূর্ণ বিপরীত দাবি করেন। তার বক্তব্য- ১৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনা কোনো হত্যার নির্দেশ দেননি— এর কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। প্রসিকিউশনের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। বরং রংপুরে আবু সাঈদের মৃত্যুর পর তিনি তার পরিবারকে সহায়তা করেছেন। একটি বিশেষ মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি তিন আসামির খালাস প্রত্যাশা করেন।

আজকের রায় দেশের বিচার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখন নজর ট্রাইব্যুনালের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD