কড়া নিরাপত্তায় ট্রাইব্যুনালে হাজির সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুন

জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের রাজসাক্ষী হিসেবে থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আজ সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে। একই মামলায় পলাতক অবস্থায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তাদের অনুপস্থিতিতেই আজ ঘোষিত হবে এ মামলার বহুল আলোচিত রায়।
বিজ্ঞাপন
সোমবার বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণা করবেন। প্যানেলের অন্য বিচারকরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে সকাল ৯টা ১০ মিনিটের পর কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয় সাবেক আইজিপি মামুনকে। মামলার শেষ শুনানির দিন হওয়ায় আজই তাকে সর্বশেষবারের মতো আদালতে হাজির করা হয়েছে। দীর্ঘ এক বছর ধরে কারাগারে থাকা মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে ইতোমধ্যে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ফলে তার শাস্তি নির্ধারণের বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়কে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট এলাকা ও ট্রাইব্যুনাল চত্বরে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবির পাশাপাশি মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনীও। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সীমিত করা হয়েছে সাধারণ মানুষের চলাচল।
গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল-১। মোট ২৮ কার্যদিবসে সাক্ষ্য-জেরা ও ৯ কার্যদিবসে প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের দিন ঘোষিত হয়। গত ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্যসহ রাষ্ট্রের আইনজীবীদের যুক্তি উপস্থাপনার পর রায়ের জন্য সময় দেন আদালত।
মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগে তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করে প্রসিকিউশন। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যাকাণ্ড ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনা। এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। মোট ৮৪ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
চলতি বছরের ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। প্রসিকিউশন যেখানে হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে, সেখানে সাবেক আইজিপি মামুনের খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন অবশ্য আশা প্রকাশ করেছেন— তিন আসামিই খালাস পাবেন।
রায় ঘোষণার সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ট্রাইব্যুনাল; এখন নজর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে।








