আমি সত্যিই কষ্ট পাচ্ছি: শেখ হাসিনার আইনজীবী

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেয়ার রায়ের পর গভীর কষ্ট প্রকাশ করেছেন তাদের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
আইনজীবী মো. আমির হোসেন বলেন, আমার ক্লায়েন্টদের বিরুদ্ধে রায় ভিন্নভাবে হলেও হতে পারত, কিন্তু তা হয়নি। এটি আমার পক্ষে যায়নি, এবং এজন্য আমি সত্যিই কষ্ট পাচ্ছি। বিশেষ করে যেহেতু এ মামলায় আপিলের কোনো সুযোগ নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আত্মসমর্পণ না করবেন বা গ্রেপ্তার না হবেন, ততক্ষণ এই অবস্থা থাকবে।
বিজ্ঞাপন
সেদিন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণা শুরু করেন। প্রথমে ৪৫৩ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায় পড়া হয়, এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে আদালত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ১ ও ২-এ মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। অভিযোগের মধ্যে ছিল উসকানি, মারণাস্ত্র ও ড্রোন-হেলিকপ্টার ব্যবহারের নির্দেশ, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, চানখারপুলে ছয়জন হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয় লাশ পোড়ানোর দায়।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ-২ অনুযায়ী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ মামুনকে রাজসাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তি দেওয়ায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার আগে সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় আসামিদের। এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয় ১৩ নভেম্বর। ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই দিন নির্ধারণ করেন।
বিজ্ঞাপন
মামলায় মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এছাড়া ৯ কার্যদিবসে প্রসিকিউশন ও ডিফেন্স পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেনের সমাপনী বক্তব্যের পর রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
প্রসিকিউশন এই মামলায় পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ এনেছে, যার মধ্যে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, চানখারপুলে হত্যাকাণ্ড এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনা। রায়ের আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণ চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকা দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। সাক্ষী করা হয়েছে মোট ৮৪ জনকে।








