রাজসাক্ষী শেখ আবজালুলের জেরা ঘিরে ট্রাইব্যুনালে উত্তেজনা

আশুলিয়ায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ছয় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় রাজসাক্ষী এসআই শেখ আবজালুল হকের জেরা ঘিরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বৃহস্পতিবার তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে এক প্রশ্নকে কেন্দ্র করে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তর্কাতর্কি চলে।
বিজ্ঞাপন
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনাল-২-এর দুই সদস্যের বেঞ্চ অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর—এর সম্মুখে এই ঘটনা ঘটেছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট থানায় কোনো পুলিশ নিহত হয়েছিল কিনা - আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমানের এমন প্রশ্নে রাজসাক্ষী আবজালুল জানান, না, তবে একজন মারা গেছেন, যিনি অন্য ইউনিটের। তার তদন্তে আমি ছিলাম, শেষ করতে পারিনি।
বিজ্ঞাপন
প্রসিকিউশন এই প্রশ্নে আপত্তি জানায় এবং দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী তর্ক-তর্কি ঘটে। ট্রাইব্যুনালের হস্তক্ষেপে শেষে এটি থামানো হয়।
এর আগে বুধবার রাজসাক্ষী ২৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে কিছু তথ্য তিনি প্রকাশ করেননি বলে মনে করা হয়েছে। প্রসিকিউশন দাবি করেছে, রাজসাক্ষী হিসেবে তিনি তার জানা সবকিছু আদালতের সামনে তুলে ধরেছেন।
বেলা ১১টার দিকে ডায়াসে ওঠা আবজালুল প্রায় ৫০ মিনিটে জবানবন্দি শেষ করেন। তিনি জানান, ৫ আগস্ট লাশ পোড়ানোর দৃশ্য নিজ চোখে দেখেননি; তবে থানায় অস্ত্র-গুলি জমা দিতে গেলে ১৫ আগস্ট অন্যদের মুখ থেকে শুনেছেন। তিনি ওসী সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিতের নাম উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
চলতি বছরের ২১ আগস্ট আদালত ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। এ সময় উপস্থিত আট আসামির সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন, কিন্তু শেখ আবজালুল দোষ স্বীকার করেছেন। তার রাজসাক্ষী হিসেবে মামলার সব তথ্য জানানো অনুমোদিত হয়েছে।
মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামি হলেন: সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল। তবে সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজন এখনও পলাতক।
বিজ্ঞাপন
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। নিহতদের লাশ পুলিশ ভ্যানে তুলে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নৃশংস ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শীও বেঁচে যেতে পারেননি। ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা হয়।







