চুরির অভিযোগে ইউপি সদস্য কর্তৃক মধ্যযুগীয় নির্যাতন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


চুরির অভিযোগে ইউপি সদস্য কর্তৃক মধ্যযুগীয় নির্যাতন

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে চুরির অভিযোগে এনে একটি  মাদ্রাসার খাদেমকে পিঠ মোচড় করে বেধে ফিল্মী স্টাইলে বেদম মারপিট করেছেন ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা। ইউপি সদস্যের নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

শনিবার (২৩ জুলাই) ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদে। 

মারধরের বিষয়ে সাংবাদিকরা ফোন দিয়ে জানতে চাওয়ায় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো.কামরুল ইসলাম খোকন বলেন, “আমার সাফ কথা আমি একজন জনপ্রতিনিধি আমি কারো কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়। আমাকে ইজ্জত দিয়ে কথা বলবেন।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওর মাধ্যমে জানা গেছে, গত শনিবার দুপুরে সোহাগদল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা উত্তর পশ্চিম সোহাগদল বায়তুন নুর জামে মসজিদের ইলেকট্রনিক্স মালামাল চুরির অভিযোগ এনে ইন্দেরহাট বন্দর থেকে মো. জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ইউপি সদস্য খোকন ও তার সহযোগীরা জহিরুল ইসলামকে বেধে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাথারিভাবে পিটাতে থাকে। এসময় জহিরুল ইসলাম চিৎকার দিয়ে বলতে থাকেন, “আমাকে মারেন কেন, আমাকে মারবেন না, আইনের লোক আছে, প্রয়োজনে আমকে তাদের হাতে তুলে দিন, আপনারা আমার মোবাইল ও জিনিসপত্র সব নিয়ে গেছেন, আমি অসুস্থ আমাকে মাইরেন না বলে ডাক চিৎকার দেন।’ এসময় পাশে থাকা সহযোগীদের মধ্যে একজন জহিরুলকে পায়ের নিচে পিটানোর নির্দেশ দেয়। 

একপর্যায়ে খবর পেয়ে নেছারাবাদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জহিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে ইউপি সদস্য খোকন বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। রোববার সকালে জহিরকে ওই মামলায় পিরোজপুর কোর্টে প্রেরণ করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে জহিরকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক ভাইরাল হয়। (যা আমদের প্রতিনিধির সংগ্রহে রয়েছে।)

জহিরুল ইসলাম পার্শবর্তী ঝালকাঠী উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নেরন ওয়াপাড়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। সে ঝালকাঠী জেলার হদুয়া বৈশাখিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার একজন খাদেম বলে জানান ওই মাদ্রাসার আপর খাদেম সাইদুল ইসলাম। অধ্যক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি জানান অধ্যক্ষ হজের জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।

এ ব্যপারে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (নেছারাবাদ সার্কেল) মো.রিয়াজ হোসেন জনবাণীকে বলেন, “ওই ব্যাক্তিকে মারার ভিডিও দেখেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”

এসএ/