আখ চাষে সাফল্যের মুখ দেখছেন কিশোরগঞ্জের কৃষকরা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


আখ চাষে সাফল্যের মুখ দেখছেন কিশোরগঞ্জের কৃষকরা

আখ একটি রসালো ও মিষ্টি জাতের খাবার। নীলফামারীর আখ খেতে খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় সব জেলার মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয়। তাই স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অন্যান্য জেলায়ও সরবরাহ করা হচ্ছে এখানকার আখ। এতে ভাল বাজার মূল্য পেয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে দিন দিন আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের।

কৃষকের তথ্য মতে, গতানুগতিক কৃষি ফসলের তুলনায় আখ চাষ বেশি লাভজনক। ফলে গত কয়েক বছর ধরে আখ চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়ে অনেক কৃষক ভাগ্যের পরিবর্তন এনেছেন। উপজেলার স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ইশ্বরদী-৩৭/৩৮ জাতের কালো, সাদা, লাল, গেন্ডারি ও হাইব্রিড জাতের আখ চাষ করছেন তারা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কয়েকটি ইউনিয়নের উঁচু এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা জমিগুলোতে এসব জাতের আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে স্বল্প পরিসরে আখ উত্তোলন শুরু করেছেন কৃষকরা। বাজারজাত ও পরিবহনের ঝামেলা ছাড়াই ভালো দামে মাঠের আখ মাঠে খুচরা ও পাইকারি দামে বিক্রি করে বেজায় খুশি তারা।

বড় ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর ক্যামেরার বাজার মাঝাপাড়া গ্রামের অমেষ চন্দ্র বলেন, ‍“আশ্বিন-কার্তিক মাসে ৭৫ শতাংশ আগাম আলুর জমিতে সঙ্গী ফসল হিসেবে আখের চারা রোপণ করেন। আলু উঠানোর পর টপসয়েল (কান্দি) বেঁধে দেয়া হয়। আর আখ বাজারজাতকরণে সময় লাগে ৮-১০ মাস। প্রতি বিঘা (৩০ শতাংশ) জমিতে আখের ফলন হয় ৬-৭ হাজার পিস। সব মিলে উৎপাদন খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। আকার ভেদে প্রতি পিস বিক্রি হয় ৯-১০ টাকা। যা খরচ বাদে আয় হয় ৫৫-৬০ হাজার টাকা। স্থানীয় পাইকারসহ রাজধানী ও বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের ব্যবসায়ীরা এখানে এসে খেত থেকে আখ কিনে নিয়ে যায়।”

চাঁদখানা ইউনিয়নের কাঠগাড়ি পাইকার পাড়া গ্রামের আখচাষি নালু বরাবরের মতো চলতি মৌসুমে ১৪০ শতাংশ, বাহাগিলী ইউনিয়নের দক্ষিণ বাহাগিলী বসুনিয়া পাড়ার গ্রামের বাসিন্দা প্রসন্ন চন্দ্র রায় ৭৫ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছেন।

তারা জানান, “অন্য ফসলের তুলনায় আখ চাষে দ্বিগুণ লাভ। আখ খেতে সঙ্গী ফসল আলু, কাঁচা মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ চাষ করে বাড়তি আয়ও হয়। গাছের গোড়া কচি পাতা গো-খাদ্যের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি শুকনো পাতা জ্বালানি হিসেবে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তবে এসব জাতের আখের রস দিয়ে গুড়, চিনি তৈরি করা হয় না। তাই বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির সুযোগ নেই। শুধু চিবিয়ে খাওয়ার চাহিদা থেকে এ আখ চাষ করা হয়।”

উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জনবাণীকে বলেন, “চলতি বছর ৯০ হেক্টর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। আখ চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় চলতি বছর তেমন রোগ-বালাই দেখা দেয়নি। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও কৃষকরা ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবেন।”

এসএ/