স্বস্তির বৃষ্টিতে পঞ্চগড়ের মাঠ জুড়ে কৃষকের প্রাণচাঞ্চল্য
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
খরা কেটে অবশেষে বৃষ্টিতে পঞ্চগড়ের খাল-বিল জলাশয় ভরে উঠেছে। চারদিকে আমন রোপন ক্ষেতের সমারোহ। চলছে মৌসুমী কৃষিকাজ।তারা একন ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। কেউ কেউ আমন ধান রোপন নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন রোপন মৌসুমে জেলায় এক লাখ ১০ হেক্টর জমিতে আমন রোপনের লক্ষ্যমাত্রা র্নিধারন করা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের দীঘল গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “সাত বিঘা জমিতে আমন রোপন করবো । আগে বৃষ্টির অভাবে জমি পড়ে ছিল । এখন হালের খুব সমস্যা। হাল পাওয়া খুব কষ্টকর। মানুষের হাত পা ধরে জমিতে হাল দিচ্ছি। যদি আর বৃষ্টি না হয় জমিতে এখন যে পানি আছে সেই পানি ১০ থেকে ১৫ দিন থাকবে। ধান উঠতে ১০০ থেকে ১২০ দিন জমিতে পানির স্থায়িত্ব লাগে।”
ওই মাগুড়া ইউনিয়নের বান পাড়া কৃষক ননিৎ কুমার বর্মণ বলেন, “আমি তিন একর জমিতে আমন রোপন করেছি। আগে ও কিছু লাগিয়েছি এখন আবার বৃষ্টি হওয়ার আবার লাগাচ্ছি। কোথাও পানি আছে আবার কিছু কিছু জায়গায় পানি নাই।”
আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের কিসমত পানবাড়া গ্রামের কৃষক প্রদীপ কুমার চন্দ্র বর্মণ বলেন, “আমি কামাল পাশার নিকট পৌনে সাত বিঘা জমি বছর চুক্তি নিয়েছি। আমন ধান লাগাবো। যখন বৃষ্টি ছিল তখন আমি সময় নিয়ে জমিতে আমন ধান লাগাতে পারিনি। এখন সেচ দিয়ে সেই জমিতে ধান রোপন করছি।”
একই উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের গাছবাড়ি গ্রামের কৃষক দবিরুল বলেন, “আমি দেড় বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করেছি। পরে খরার কারণে জায়গায় জায়গায় রোপন করা রোপা নষ্ট হয়ে যায়। আমি সেচ দিতে মেশিন বসাতে চেয়েছিলাম। এরপর হঠাৎ বৃষ্টি হয়। তবে যে সব জায়গায় রোপা নষ্ট হয়ে গেছে ‘ সেখানে নতুন করে রোপা লাগাতে হবে।”
গাছবাড়ি গ্রামের কৃষক আদরুত বলেন, “বীজ তলা থেকে বীজ নিয়ে গত দুইদিন ধরে রোপা লাগাতে শুরু করেছি।”
তেতুঁলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জনবাণীকে বলেন, “বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হবে। কখনো হাল্কা ও কখনো ভারী। ২০ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ১৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। এরমধ্যে জুলাইয়ের ২০ তারিখ ২৯ মিলিমিটার, ২১ তারিখে ৯ মিলিমিটার, ২২ তারিখে ১৮ মিলিমিটার, ২৩ তারিখে ২৩ মিলিমিটার, ২৪ তারিখে ২ মিলিমিটার,২৫ তারিখে ৫ মিলিমিটার,২৬ তারিখে ২৭ মিলিমিটার ২৭ তারিখে ২৯ মিলিমিটার ,২৮ তারিখে ১৫ মিলিমিটার ২৯ তারিখে ২৯ মিলিমিটার ও ৩০ জুলাই ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.রিয়াজ উদ্দীন জনবাণীকে বলেন, “আমন রোপনের লক্ষ্যমাত্রার ৮৫ শতাংশ জমিতে রোপা লাগানো হয়ে গেছে। বৃষ্টি হচ্ছে এখন সমস্যা নাই। তবে যদি সমস্যা হয়ে থাকে সে জন্য সেচ কিংম্বা বিদ্যূৎ চালিত সুবিধা নিয়ে রোপা লাগানোর পরার্মশ দেওয়া আছে।”
এসএ/