মাদ্রাসা ছাত্রকে দুই শিক্ষকের মধ্যযুগীয় নির্যাতন!
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
ভোলার চরফ্যাসনে এ আজাহার আলী কওমী মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মোঃ ইদ্রিস ও সহকারী শিক্ষক ইমাম হোসেনের বিরুদ্ধে শরহে বেকায়া শ্রেণীর ছাত্র ও পাশবর্তী আখন বাড়ীর দরজায় পাঞ্জেখানা মসজিদের ঈমাম মোঃ শাহিন (২০) নামের একজনকে মাদ্রাসায় দুই দিন ধরে আটক রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ও জোরপূর্বক মাথার চুল ন্যাড়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার চরফ্যাসন উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর আফজাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শনিবার (৩০ জুলাই) আহত শাহিন তাদের বন্দীশালা থেকে ছাড়া পেয়ে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ তুলে ধরে হাতে, পিঠে, মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আহত মাদ্রাসার ছাত্র মোঃ শাহিন চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শাহিন আসলামপুর ইউনিয়নের ০৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ নুরে আলম পাটোয়ারীর ছেলে।
আহত মাদ্রাসা ছাত্র মোঃ শাহিন জানান, গত রমজানে শাহিন চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর আফজাল গ্রামে এ আজাহার আলী কওমী মাদ্রাসার ভর্তি হন। পাশাপাশি একটি পাঞ্জেখানা মসজিদের ঈমামতি করেন। মাদ্রাসা পরিচালনা ও হুজুরদের ব্যবহারে শাহিন অসুন্তুষ্ঠ। তাই সে ইচ্ছা পোষন করেছে আর সেই মাদ্রাসায় পড়বেনা। কোরবানি ঈদের ছুটি শেষে গত কয়েকদিন মাদ্রাসা না যাওয়ায় এ আজাহার আলী কওমী মাদ্রাসার মোহতামিম মাওঃ মোঃ ইদিস ছাত্র শাহিনকে পাঞ্জেখানা মসজিদ থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক নুরুল ইসলাম ও মাদ্রাসার অন্য আরেকজন ছাত্র শাহিনকে পাঠায়। তারা মসজিদে রাত ৯টার দিকে একা পেয়ে মাদ্রাসার মোহতামিমের বরাত দিয়ে ছাত্র শাহিনকে ধরে নিয়ে যায়। মাদ্রাসা নিয়ে শাহিনের হাত,পা বেঁধে মোহতামিম মাওঃ মোঃ ইদ্রিস ও সহাকারি শিক্ষক ইমাম তাকে মাদ্রাসায় আটক রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় দফায় দফায় নির্যাতন করে। এবং শাহিনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক মাথার চুল ন্যাড়া করে দেয়।
এব্যাপারে স্থানীয় বাহারুল ইসলাম এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে জানান, এ আজাহার আলী কওমী মাদ্রাসার মোহতামিম মাওঃ মোঃ ইদ্রিস মাদ্রাসার আড়ালে থেকে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে অপকর্ম করে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
মোহতামিম মাওঃ মোঃ ইদ্রিসের বড় ভাই মাও মোঃ কালু ঘটনার কথা শিকার করে দুখ প্রকাশ করেন এবং বিচারের আশ্বাস দিয়ে আহত শাহিনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
অভিযুক্ত মাওঃ মোঃ ইদ্রিস ও ইমাম হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাথার চুল ন্যাড়া করা মাদ্রাসার নিয়ম-কানুনে রয়েছে। মারধর করতে গিয়ে শাহিনকে বেশি মারধর করা হয়েছে।
এব্যাপারে ওসি মো.শামসুল আরেফীন বলেন, “মোঃ মনির মিয়াকে আহত শাহিনের মাথা ন্যাড়া এবং গায়ে পিঠের আঘাতের চিহ্ন দেখালে তিনি অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।”
এসএ/