গণিত ব্যবহারে ছবি আঁকেন রাবি’র মিথুন দে
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
রং তুলির আঁচরে শিল্পী তৈরি করে অসাধারণ চিত্রকর্ম। তবে তুলি আর রং নয়, গণিতের ব্যবহারেই তৈরি হচ্ছে অসাধারণ চিত্রকর্ম। যে কাজটি করে দেখিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থী। মিথুন দে নামের ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে তার এই গাণিতিক সমীকরণের চিত্রকর্ম।
তিনি গাণিতিক ভাবে সব রকমের চিত্র আঁকতে পারেন। মানুষ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, প্রধান ফটক, শহীদ মিনার, ইত্যাদি সব রকমের চিত্র আঁকতে পারেন তিনি। ছোট বেলা থেকেই তার ছবি আঁকার প্রতি ছিলো ভালোবাসা। সেই ভালোবাসা থেকেই তার এই ডেসমোস শিল্পকর্মটি শেখা। এটা আসলে একধরনের গাণিতিক আর্ট।
তার এই চিত্রকর্ম সম্পর্কে জানতে চাইলে মিথুন জনবাণীকে বলেন, “গাণিতিক সমীকরণের মাধ্যমেই আমি এগুলো করে থাকি। এটা কে সমীকরণ আর্ট ও বলা যায়। আমরা যখন স্কুলে সরলরেখা বা বৃত্ত এর গণিত করার সময় চিত্র কেমন হবে তা দেখার জন্য এক ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করতাম সেটাই ডেসমোস অ্যাপ। আমি এই অ্যাপ ব্যবহার করে ছবি আঁকার চেষ্টা করি। আমাদের গাণিতিক বিজ্ঞানে সমীকরণের অভাব নেই। এই সব সমীকরণ ব্যবহারের গ্রাফ রয়েছে এবং সেটি কোন না কোন ভাবে পটভূমি তৈরি করা যায় । এই সকল সমীকরণের গ্রাফ করেই আমি এই ছবিগুলো আঁকি।”
তিনি আরো বলেন, “একেকটা ডেসমোস আর্ট করতে প্রায় আমার ১৬-২০ ঘণ্টার মতন সময় লাগে। এখন সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমি সব ধরনের ছবি আঁকতে পারি। বিল্ডিং থেকে শুরু করে মানুষ এর প্রতিকৃতি সবই করতে পারি। এই ধরনের আর্ট পৃথিবীতে খুব কম মানুষ করে। বাংলাদেশেও খুব কম সংখ্যক মানুষ রয়েছে যারা এমন কাজ করে। কারণ এটা খুব সময় সাপেক্ষ একটা বিষয় এবং আপনাকে প্রত্যেকটা সমীকরণ ধরে ধরে কাজটি করতে হয়। এই কাজ গুলো সবার মাঝে তুলে ধরতে আমি আমার কাজের ছবি গুলো আমার ফেসবুক পেজে দিয়ে থাকি ইচ্ছে করলে আপনিও দেখে আসতে পারেন নাম ‘the data artist’।
এবিষয়ে জানতে চাইলে পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. গোলাম হোসাইন জনবাণীকে বলেন, “অসাধারণ তার একটি শিল্প শৈলী হলো ম্যাথমেটিক্যাল ইকুয়েশনের মাধ্যমে কোনো স্কেচ তৈরি করা। আমি প্রথম যখন তার স্কেচগুলো দেখি তখন সত্যিই অভিভূত হয়ে যাই। ম্যাথমেটিক্সের ইকুয়েশনকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো স্কেচ আঁকা আসলেই অনেক কঠিন একটি কাজ। আর সেই কাজটি খুব অবলীলায় যে ছাত্রটি করে থাকে সে হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিথুন দে। প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় করোনাকালীন সময়ে স্কেচ আঁকাই অভ্যস্ত হয় মিথুন। সারা পৃথিবীতে এধরনের কাজ খুব অল্প সংখ্যক মানুষ করে থাকে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার জানা মতে, মিথুন দে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যক্তি যে এই কাজটা করে। এই কাজটি অনেক শ্র্রম সাপেক্ষ এবং খুব ধৈর্য ধরে করতে হয়। আর এই কাজটি মিথুন খুব নিপুণতার মাধ্যমে করে থাকে। আমি মিথুন দের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কামনা করি এবং সে তার শিল্পকর্ম নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাক সেই প্রার্থনা করি।”
এসএ/