নিরাপত্তা সড়কের জন্য কড়াকড়ি নিয়ম প্রয়োজন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


নিরাপত্তা সড়কের জন্য কড়াকড়ি নিয়ম প্রয়োজন

সড়কে ঘটে যাওয়া অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্যই বেপরোয়া চালককে নিঃসন্দেহে দায়ী করা হয় । আর এইসব ড্রাইভারদের অধিকাংশকে জনগণ মাদকাসক্ত বলে অভিযোগ করে থাকে । রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যান মতে ২০২১ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ৫ হাজার ৩৭১টি স্থানে । সেসব দুর্ঘটনায় পর্যায়ক্রমে নিহত হয়েছেন মোট ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত সংখ্যা ৭ হাজার ৪৬৮ জন। নিহতদের মধ্যে  ৮০৩ জন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী। সকলের দাবী সরকার এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (BTRA) সঠিক নির্দেশনার বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে এসব সংশোধন করা । মূলত দায়িত্বহীনতার আর সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে সড়কে মৃত্যু সংখ্যা কোনভাবেই কমছে না । পরিবহন চালকদের মধ্যে মাদকাসক্ততা, বিভিন্ন দুর্নীতি, চাঁদাবজিত্ব রাজনৈতিক দলমত বিশেষে নৈরাজ্য এখন এই সমস্যার অন্যতম কারন ।

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি হতে থাকায় গত বছর বিভিন্ন ধাপে দেশ জুড়ে কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করা হয় । যার কারণে সর্বমোট ৮৫ দিন সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ ছিল। এই দীর্ঘ সময় গণপরিবহন বন্ধ থাকালেও সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়াকে সমাজের সাধারণ মানুষের জন্য উদ্বেগজনক।

অন্যদিকে বর্তমান সময় গ্রাম অঞ্চলের অনেক সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য বিভিন্ন কারণে গণমাধ্যমে আসেনা । বলা যায় পত্রপত্রিকায় যে সংখ্যা প্রকাশিত হয়, গ্রামাঞ্চলে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সংখ্যা একত্রিত করে সংযুক্ত করলে প্রকৃত ‍দুর্ঘটনার সংখ্যা হবে প্রায় চার বা পাঁচ গুণের বেশি ।   ঢাকা বিভাগে সড়ক দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান সবচেয়ে বেশি । পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত গত বছর মোট দুর্ঘটনায় সিংহভাগ ঢাকা বিভাগে ঘটেছে । ঢাকা বিভাগে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি প্রয়োজন ।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রথম পাতায় ‘ড্রপ টেস্ট ছাড়া চালক পাবে না লাইসেন্স’ এমন সংবাদ দেখা যায় । সেখানে লেখা হয়েছে আগামী রবিবার (৩০ জানুয়ারি)-এর পর থেকে ড্রপ টেস্ট ব্যতীত কোন চালককে কোনভাবেই লাইসেন্স দেওয়া যাবে না । পুরনো লাইসেন্স নবায়ন করতে গেলেও একই নিয়ম থাকবে। যেখানে বর্তমান ‘মাদকাসক্ত গাড়ি চালকদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে‘ এমন কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি । প্রচারণাও করা হয়নি কোথায় । চালকদের ন্যূনতম সচেতনতার জন্য সরকার বা বিআরটিএ-কে মাদকাসক্তদের চিহ্নিত করে বা সতর্ক করার জন্য হলেও ‘মাদকাসক্তদের লাইসেন্স বাতিল করার কোন উদ্যোগ’ পরিকল্পনা সম্পর্কে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা উচিত । সচেতন চালকদের অনেকে এই প্রস্তাব সমর্থন করবে ।

এই প্রস্তাব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সম্মুখীন হতে পারে ‘ঘুস দিন সেবা নিন’ সমস্যা । যাতে করে বিভিন্ন মাদকাসক্ত চালক সহজেই লাইসেন্স পেয়ে যেতে পারে ।  বর্তমান বাংলাদেশের সচেতন নাগরিকদের চোখে  ‘নিরাপত্তা পেতে ঘুস’ ‘পরিচয় পত্র পেতে ঘুস’ ‘পার্সপোট পেতে ঘুস’ ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ঘুস’ এসব অবৈধ পন্থার গুলোর অন্যতম । এগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ঘুস বন্ধ, ড্রপ টেস্ট বাস্তবায়ন ও মাদকাসক্তদের লাইসেন্স বাতিল করার মতো কড়াকড়ি নিয়ম করলে সড়ক দুর্ঘটনা হার অনেকটা কমবে।

রানা আহম্মেদ অভি, ঝিনাইদহ

এসএ/