কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট ঝড়, ৫ মিনিটেই এক কেন্দ্রের নয় পরিক্ষার্থী বহিস্কার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট ঝড়, ৫ মিনিটেই এক কেন্দ্রের নয় পরিক্ষার্থী বহিস্কার

সারাদেশে চলমান এসএসসি পরিক্ষার প্রথমদিনে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার খারিজ্জমা ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নয় পরিক্ষার্থী বহিষ্কার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে গলাচিপা উপজেলার খারিজ্জমা ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এঘটনা ঘটে।

সকালে পরিক্ষার শুরুতে খাতা বিতরণের ৫/১০ মিনিটের মধ্যেই ঠুনকো অভিযোগে একটি কেন্দ্রে নয় পরীক্ষার্থী বহিস্কার করে সমালোচনায় পড়েছেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইসমাইল রহমান।

বহিষ্কারকৃত পরিক্ষার্থীরা হলেন, গুয়াবাড়িয়া এ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোসাঃ লিয়া আক্তার (২২৩২৭৬) ও সুমাইয়া আক্তার (২২৩২৭৫), কল্যাণ কলস বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিরিন নাহার (২২৩২২৬) ও ইমা আক্তার (১১৩৮৯৪), মধ্য হরিদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোকসেদুল (২২৩২১৩), খারিজ্জমা ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শোয়েব সরদার (২২৩১২৭), লামনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নয়ন হোসেন (১১৩৮৭১), মধ্য ধরান্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাদিয়া (১১৩৯১১) এবং ভূরিয়া বিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় (২২৩৩৮৩) 

এদিকে বহিস্কার হওয়া ৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭ জনের খাতায় রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছাড়া কিছুই লেখেনি। বাকী দুজনের এক জনে দুটি উত্তর এবং অপরজনে তিনটি উত্তরের বৃত্ত ভরাট করেছে। এ ওই এলাকার শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

পরিক্ষা শুরু কিছুক্ষণ পূর্বে কেন্দ্রে উপস্থিত হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইসমাইল রহমান। 

তারপর সে কক্ষ পরিদর্শন শুরু করে। এরপরই ঠুনকো অভিযোগে একের পর এক বহিষ্কার করা শুরু করে। পরে এর পরিমাণ দাড়ায় নয় জনে। পরিক্ষা শুরু সাথে এরকম ঘটনায় কেন্দ্রের বাহিরে অপেক্ষায় থাকা অভিভাবকদের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক করুণ হৃদয় বিদারক দৃশ্য।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইসমাইল রহমানের পা ধরেও রেহাই পায়নি পরিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে কেন্দ্রের বাহিরে শুরু হয় নানান ধরনের সমালোচনা।

বহিস্কৃত পরিক্ষার্থী ও মধ্য হরিদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোকসেদুল বলেন, আমি সকালে বৃষ্টির মধ্যে ভিজে তারাহুরো করে শেষ সময়ে হলে ডুকছি, খাতা পাওয়ার পর দাড়িয়ে স্বাভাবিক হয়ে সবকিছু ঠিক করে বসতে যাবো, তখনই এসে আমাকে এক্সপেল্ড করে।

বহিস্কৃত পরিক্ষার্থী মোসাঃ ইমা আক্তার বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট স্যারকে দেখে ভয়ে আমার হাত কাঁপতে কাঁপতে কলমটা পরে যায়। কমল তুলতে নিচু হলেই, সে আমার খাতা নিয়ে যায় এবং হেড স্যারের রুমে বসিয়ে রাখে।

আরেক পরীক্ষার্থী মোঃ শোয়েব সরদার বলেন, আমাদের অপরাধ আমরা অবগত নয়। আমরা কোন অসাদুপায় অবলম্বন করিনি। খাতায় লেখাই শুরু করিনি। তার প্রমাণ আমাদের খাতা চেক করলে পাওয়া যাবে। তিনি কেন আমাদের সাথে এমন করছেন, আমরা জানিনা। তার পা ধরেও আমরা কোন সহায়তা পায়নি।

এছাড়াও সকল সাধারণ পরিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। সকল পরিক্ষার্থীদের মনমানসিকতা খারাপ হয়েছে গেছে বলেও জানান অভিভাবকরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইসমাইল রহমান বলেন, ‘ বিভিন্ন কারনে তাদের বহিস্কার করা হয়েছে। অনেকেই দেখাদেখি করছিল এবং প্রশ্ন এক্সচেঞ্জ করছিল এ কারনে তাদের বহিস্কার করা হয়েছে। অনেকের খাতায় কিছু লেখা নেই এবং পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যেই কেন বহিস্কার। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তারা খাতায় লিখেছে এবং সময় অরেকটু বেশি হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই ,তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।’

আরএক্স/