পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে কৃষক
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:৫৫ অপরাহ্ন, ১লা অক্টোবর ২০২২
পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় পাবনার বেড়া উপজেলার হাট-বাজারে কৃষক ও মজুদ ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে। আজ শনিবার বেড়া সিএন্ডবি চতুর হাট ও গত বৃহস্পতিবার কাশিনাথপুর হাটে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক ও মজুদ ব্যবসায়ীরা অটোভ্যান, করিমন, নছিমন ও ছোট ছোট ট্রাকে করে হাটে পেঁয়াজ নিয়ে এসেছে বিক্রি করার জন্য।
হাট ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতা এবং বেপারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্রেতার চেয়ে পেঁয়াজ বিক্রেতার সংখ্যাই বেশি, সেই সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের মোকামে চাহিদা না থাকায় হাটে পেঁয়াজ বিক্রি কম হচ্ছে। আমদানি বেশী, চাহিদা কম এবং একেবারেই কম দাম হওয়ার কারণে অনেক কৃষক ও মজুদ ব্যবসায়ীরা তাদের পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পেরে বাড়ি ফিরে নিয়ে যেতেও দেখা গেছে।
কাশিনাথপুর হাটে কথা হয় সুজানগর উপজেলা থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসা কৃষক আসাদ প্রামানিক, আমিরুল, জাহিদ হোসেন, সাঁথিয়া উপজেলা ক্ষেতুপাড়া থেকে আসা জাফর, মুন্নাফ বেপারী, বরাট গ্রাম থেকে সোলাইমান, জব্বার, করিম বেপারীর সাথে,তারা বলেন দাম বেশির আশায় মৌসুমের সময় ১৩শ’ ১৪শ’ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ না বেচে ঘরে রেখেছিলাম ২ হাজার ২৫শ’ টাকা মন দরে বিক্রি করবো বলে কিন্তু দামতো বেশী পেলাম না বরং দীর্ঘদিন ঘরে রাখার ফলে পেঁয়াজ শুকিয়ে গেছে,আবার অনেক পেঁয়াজে গাছ হয়ে গেছে। ভালো পেঁয়াজের যেখানে চাহিদা এবং দাম নেই সেখানে গাছ বের হওয়া পেঁয়াজ কেউ নিতে চায় না আবার দামও অনেক কম। গাছ জালানো পেঁয়াজ প্রকার ভেদে ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে । ভালো মানের পেঁয়াজের বাজার দর কেমন চলছে জানতে চাইলে কৃষক ব্যবসায়ীরা বলেন,ভালো মানের পেঁয়াজ ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৩ শ’ টাকা মণ দরে হাটে বিক্রি হচ্ছে।
হাটে পেঁয়াজ কিনতে আবুসামা, বাবু, রওশন, আনন্দ ও আকছেদ বেপারীর সাথে পেঁয়াজ কেনা বেচা নিয়ে কথা হলে তারা জানান, পেঁয়াজের দাম উর্ধমুখী হলে আমরা কোন ধরনের লোকসানের ভয় করিনা, তখন কিনতে পারলেই মোকামে বেশী দামে বিক্রি করতে পারি, মোকামের বড় বড় আড়ৎদাররা তখন পেঁয়াজ কেনার জন্য আমাদের নির্দেশ দেয়। কিন্ত বাজার দর যখন কমতে থাকে তখন মোকামে চাহিদা কম থাকায় আড়ৎদাররা কম দাম অল্প পরিমান পেঁয়াজ কিনতে বলে। বেশী দামে পেঁয়াজ কিনে মোকামে নিয়ে গেলে লোকসান হওয়ার সম্ভবনা বেশী থাকে। পূজার জন্য বর্ডার ৮দিন বন্ধ থাকার ফলে ভারত থেকে অন্যান্য পণ্যের মত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকার ফলে দেশীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম একটু বেশী হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে বেড়া চতুর হাটের আড়ৎদার মুন্নাফ প্রামানিক জানান।
সোনাতলা গ্রামের রাজ্জাক প্রামানিক এবার তার ৬ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন তিনি দুঃখ করে বলেন আগামি বছর আর পেঁয়াজের চাষ করবো না,অন্য ফসলের চাষ করলে এতো লোকসান ভয় থাকেনা। দুঃখের মাঝে তিনি রসিকতা করে বলেন, যে সব পেঁয়াজ চাষি ও মজুদ ব্যাবসায়ীরা এবার অধিক লাভের আশায় পেঁয়াজ আটকিয়ে ঘরে রেখেছেন বর্তমান বাজারের অবস্থায় ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা ।
হাট ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেতে বোনার জন্য ছোট আকারের মুড়ীকাঁটা পেঁয়াজ প্রতিমণ ১ হাজার ৪ শ, থেকে ১ হাজার ৬ শ , টাকা মণ দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে ।
জেবি/ আরএইচ/