‘বিএনপি-জামায়াতের প্রথম ১০০ দিন ছিল নারকীয়’


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ১০:৫৬ অপরাহ্ন, ৫ই অক্টোবর ২০২২


‘বিএনপি-জামায়াতের প্রথম ১০০ দিন ছিল নারকীয়’
সজীব ওয়াজেদ জয়-ছবি: ফেসবুক

২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ১০০ দিনের কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। সেই সময়ে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

গত সোমবার দেয়া পোস্টে জয় লিখেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতকে যারা ভোট দেবে না, তাদের পরিণতি কত কঠিন হতে পারে, তার দৃষ্টান্ত শুরু হয়ে গিয়েছিল মাসখানেক আগে থেকেই। নির্বাচনের দিন দুপুরের পরপরই দেশের ওপর যেন নরক ভেঙে পড়ে। শুরু হয় চারদিকে খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ ভয়াবহ সহিংসতা। দেশের মানুষ ১৯৭১ ও ৭৫-এর পর এমন চরম আতঙ্কজনক পরিস্থিতি চাক্ষুষ করেনি। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎকালীন সরকার প্রতিশ্রুতি দেয় ১০০ দিনেই দেশকে সুপথে পরিচালিত করবে বলে। কিন্তু সবই ছিল বাগাড়ম্বর।’

জয় লিখেছেন, জনতাকে দেয়া সেই ১০০ দিনের প্রতিশ্রুতির বেলুন ফুটো হয়ে যায়। অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা, রাজনীতি, প্রশাসনসহ সর্বক্ষেত্রেই সরকারের চরম ব্যর্থতা মানুষকে আশাহত করে। দেশ নিয়ে উচ্চাশা করতেন যারা, সেই বুদ্ধিজীবীদের মুখে কুলুপ এঁটে দেয়া হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছিল কালো তালিকায়। রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাসক্ষেত্র বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল।

জয় উল্লেখ করেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সরকারের ১০০ দিনে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে নিহতের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২০০-এর বেশি। ধর্ষণের ঘটনা গড়ে প্রতিদিন ৪টি, খুনের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ৬ জন। এ সময়ে কোনো রকম পরিকল্পনা ও চিন্তাভাবনা ছাড়াই বাফুফের পুরোনো কমিটি ভেঙে দেয়ায় ফিফার সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয় বাংলাদেশকে। হাওয়া ভবনে শুরু হয় মাফিয়া সম্রাজ্য।’

ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। এ কথা উল্লেখ করে জয় আরও লিখেছেন, ‘খালেদা জিয়া ছিলেন নামেমাত্র প্রধানমন্ত্রী, নেপথ্যে থেকে দেশ চালাতেন তারেক রহমান। দ্বিতীয় পুত্র আরাফাতও দখল করেন ক্রিকেট বোর্ড। প্রধানমন্ত্রীর বড় বোন হন মন্ত্রিসভার সদস্য। আর তার ভাই সাঈদ এস্কান্দার হন এমপি। ভাগ্নে শাহরিন ইসলাম তুহিন এমপি পদে পরাজিত হলেও জায়গা হয় হাওয়া ভবনে। তদবিরের একটা টেবিল ছিল তারও দখলে।’

ফেসবুক স্ট্যাটাসে জয় লিখেছেন, ‘ক্ষমতায় বসেই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নেয়ার নামে রদবদল ও চাকরিচ্যুত করতে শুরু করে। সেই সময়টা সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য দুঃস্বপ্নের কাল বলে বিবেচিত হয় আজও। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, বাস টার্মিনাল, গণশৌচাগার, ভিসির অফিস, বাড়ি, জমি, মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়, ঠিকাদার অফিস, কবরস্থান, আড়ত, দোকান, প্রেসক্লাব, কলেজ, এমপি হোস্টেলের স্যুট ও কক্ষ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কারপার্কিংয়ের স্থান সবই দখল করে নেয় তারা।’

পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিএনপি-জামায়াত সরকার বদলে দেয় বলেও উল্লেখ করেছেন জয়। তিনি লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বদলে দিয়ে রাতারাতি মিথ্যাচার প্রতিষ্ঠা করা হয়। ক্ষমতায় আরোহণ করে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে খালেদা জিয়া দেশের মানুষকে সুন্দর ও শান্তিময় ভবিষ্যতের যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, ১০০ দিনে তা পুরোটাই ভেস্তে যায়। পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল নিত্যপণ্যের দাম। সেই তুলনায় বাড়েনি মানুষের আয়। সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে ব্যর্থ হয়, ব্যবসায়ীদের ওপর তৎকালীন সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন জয়।

জেবি/ আরএইচ/