পর্যটকের আগমনে মুখর কুয়াকাটা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:২৫ পূর্বাহ্ন, ৯ই অক্টোবর ২০২২
টানা পাঁচদিনের সাপ্তাহি ছুটিতে পর্যটকদের পদচারনায় এখনই মুখরিত হয়ে উঠেছে সুর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। ঈদ এ মিলাদুন্নবী, সাপ্তাহিক ছুটি ও দূর্গা পূজা ঘিরে হাজারো পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড়ে মুখরিত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত।
বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে আগামী ১ সপ্তাহের আগাম বুকিং হয়ে গেছে আবাসিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগুলো। রুম সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেনীর আবাসিক হোটেল গুলোর মধ্যে অনেকেই অতিরিক্ত মুনাফার লোভে রুম খালি থাকতেও আগাম বুকিং নিচ্ছে না এমন অভিযোগ অনেকেরই।
বৃহস্পতিবার থেকে একটানা পর্যটক রয়েছে সমুদ্র সৈকতে। এ ভীড় থাকবে আগামী রোববার পর্যন্ত এমনটা জানান আবাসিক হোটেল-মোটেল সমিতির নেতৃবৃন্দ। বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও পর্যটকদের যেন উৎসাহ উদ্দিপনার শেষ নেই। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে প্রতিনিয়ত ভীড় বাড়ছে পর্যটকদের। ছুটির দিন গুলোতে তীল ধারনের ঠাই পাওয়া যায় না।
আগে যেখানে ছুটির দিন ছাড়া তেমন একটা পর্যটকদের আগমন ছিল না। সেখানে এখন প্রতিনিয়ত পর্যটক থাকছে। আর এতে খুশি পর্যটক নির্ভর ব্যবসায়িরা। আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি খাবার হোটেল, বার্মিজ মার্কেট, শুটকী মার্কেট, ফিস ফ্রাই মার্কেট সব জায়গায়ই ভীড় দেখা গেছে। দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার পাশাপাশি পছন্দের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটকরা।
আগামী নভেম্বর থেকে আরো ভীড় বাড়বে বলে প্রত্যাশা পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীদের। আগত এসব পর্যটকরা সমুদ্রের নোনা জলে গাঁ ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছেন। অনেকে সৈকতের বিভিন্ন স্পটে ঘুরে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। পর্যটকের এমন ভিড়ে হাসি ফুটেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মুখে।
এদিকে আগে থেকেই বুকিং রয়েছে অধিকাংশ হোটেল মোটেল। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিষ্ট পুলিশের সঙ্গে থানা পুলিশের তৎপরতারও রয়েছে চোখে পড়ার মতো। ছুটির দিনে পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় পর্যটকদের বাড়তি চাপের ফলে সৃষ্ট জানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি রোদের তীব্রতা উপেক্ষা করে কাজ করছেন মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খোন্দকার মোঃ আবুল খায়ের । এসময় তিনি পর্যটকদের যাতায়াতকে নির্বিঘ্ন করার লক্ষে রাস্তার উভয় পার্শ্বের রাখা মালামাল সরিয়ে রাস্তা পরিস্কার করেন। ওসির এমন কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন পর্যটক সহ স্থানীয়রা।
সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, সমুদ্রের ঢেউ, সবুজ বনানীর আপার ছোয়া আর গঙ্গামতির চরে লাল কাকড়ার অবাধ বিচরনের জন্য সাগরকন্যা কুয়াকাটা দিনদিন হয়ে উঠেছে পর্যকদের প্রিয় স্থান। রয়েছে উপজাতি রাখাইন সম্প্রদায়ের জীবনাচর ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধন, সুন্দরবনের একাংশ টেংরাগিরি বনের দৃশ্য উপভোগের সুযোগ। সাপ্তাহিক ছুটিতে কুয়াকাটার দীর্ঘ বেলাভুমি মুখরিত হয়ে ওঠে পর্যটকদের পদচারনায়। আগত পর্যটকরা বীচে দাড়িয়ে প্রিয়জনের সাথে ছবি তুলছে, সমুদ্রে জলকেলিতে খেলা করছে, দর্শনীষ্পট গুলো ঘুড়ে দেখছে।
ছুটি উপভোগ করতে অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছেন সৈকতে। সেখানে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো সমুদ্র সৈকতের আরেকটি আনন্দের উপলক্ষ মনে করেন পর্যটকরা। এদিকে সমুদ্রের তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙন দেওয়া সৈকত রক্ষায় দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন পর্যটক সহ স্থানীয়রা,
অভিযোগ রয়েছে অতিরিক্ত পর্যটকদের আগমনে বাড়তি দাম নিচ্ছেন ফ্রাই ফিসের দোকান সহ অনন্য ব্যবসায়িরা দিগুণ দাম হাঁকাচ্ছেন এই সব অসাধু ব্যবসায়ীরা এতে কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন পর্যটকরা এমনটাই দাবী স্থানীয়দের। অপর দিকে পৌরসভার বেশ কয়েকটি রাস্তা উঁচু নিচুর কারণে দুর্ভোগ সহ দূর্ঘটনা ঘটছে রোজ খুব জরুরি রাস্তা গুলো মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শুক্রবার পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকায় অন্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি দাম নেওয়া হয়েছে বলে জানান। গাজীপুর থেকে আসা এক পর্যটক তিনি বলেন, গতকাল যে মাছ ৫০০ টাকায় কিনেছি একই ওজনের মাছ আজকে ১৫০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে।
আরএক্স/